“বারান্দায় এসো দীপশিখা।”
ঘর নিস্তব্ধ। পিনপতন নীরবতা। এর মাঝে এমন গাঢ় স্বর। হৃদয়ের উচাটন বাড়ানোর জন্য হয়তো আর কিছুর প্রয়োজন নেই। শীতল এক দক্ষিণা বাতাস যেন ছুঁয়ে গেলো দীপশিখার মনবাগিচায়। মানুষটি কি বাহিরে? দীপশিখা চুপ করে রইলো। ওপাশের মানুষটিও নীরব। হৃদয়ের স্পন্দন অনুভূত হচ্ছে প্রবলভাবে। কত সময় পার হলো? হিসেব নেই। নিস্তব্ধতা ভাঙ্গলো জাওয়াদ। হালকা স্বরে শুধালো,
“আসবে না?”
দীপশিখা সাথে সাথে বারান্দায় গেলো। পনেরো ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। কুয়াশার পরদে সবকিছু জলছবির মতো লাগছে। রাস্তার সোডিয়ামের আলোর মৃদুরেখায় লম্বা মানুষটিকে দেখতে পেলো দীপশিখা। একটা কালো ওভারকোট পড়া। নাকের নিচ থেকে ঢাকা মাফলারে। লোকটি কি পাগল? এখন ঘড়িতে সময় এগারোটা। এই সময় কেউ কারোর বাসার নিচে দাঁড়ায়? দীপশিখা বিস্মিত স্বরে শুধালো,
“আপনি এখানে?”
“তোমার সাথে আমার কথা আছে।”
গাঢ় স্বরে বললো জাওয়াদ। এখানে তার দাঁড়ানোর কথা নয়। তবুও আজ জাওয়াদ হামিদ প্রথমবারের মত হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় একটি মেয়ের বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছে।
দীপশিখা রাগ দেখিয়ে রিকশা চেপে চলে যাওয়ার সাথে সাথে জাওয়াদের মেজাজের সংযত স্বভাব এলোমেলো হয়ে গেলো। জাওয়াদের পরিপাটি খোলশটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। মাথা ফেটে যাবার উপক্রম হল রাগে। কিন্তু করার কিছু নেই। যার উপর এতো রাগ সেই পালটা রাগ দেখিয়ে চলে গেছে। কি আর করার? জাওয়াদ ঠিক করলো সে বাসায় চলে যাবে। কুয়াশায় আশি কিলোমিটার পার ঘন্টায় বাইক চালিয়ে বাসায় এলো সে। ঠান্ডা হাওয়ায় জমে যাবার মতো অবস্থা হলো। তবুও রাগ কমছে না। কি যন্ত্রণা!
বাসায় আসতে না আসতেই আব্দুল হামিদ সাহেবের মুখোমুখি হলো সে। আব্দুল হামিদ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকালেন। আব্বার এই দৃষ্টিকে খুব ভয় পায় জাওয়াদ। যদিও আব্বার সাথে আজকাল সম্পর্ক সমান্তরাল রেখায় চলছে। আব্বা তাকে গালাগালি করছেন না। তবুও এই দৃষ্টিতে গলা শুকিয়ে গেলো। এই দৃষ্টির ভয়েই চিংকি তার গলায় বিবাহ নামক খড়া ঝুলাতে পেরেছে। জাওয়াদ শুকনো গলায় বললো,
“কেমন আছেন আব্বা?”
আব্দুল হামিদের চোখমুখ আরোও কুচকে গেলো। যেনো প্রশ্নটি তার একেবারেই পছন্দ হয়নি। ফলে আরোও বুক শুকিয়ে এলো। গলাটা যেনো সেগুন কাঠ হয়ে গেছে। আব্দুল হামিদ নীরবতা ভাঙ্গলেন। শ্লেষ্মাজড়িত স্বরে বললেন,
“দীপশিখা মায়ের সাথে কেমন চলছে?”
জাওয়াদ কোনো উত্তর খুঁজে পেলো না। কি বলবে আব্দুল হামিদকে? মেয়েটির সাথে তার ঝামেলা হয়েছে? মেয়েটা একটা তিলে খচ্চর? দেমাগী? আব্দুল হামিদ কেঁশে গলা সাফ করে বললেন,
“আমি মোস্তফা ভাইকে ফোন করেছিলাম। উনি বললেন, মেয়ে সময় চাচ্ছে। আমি বললাম, যেনো আংটি বদল হয়ে যায়। আমাদের সময় এতো ঝামেলাই ছিলো না। বাবা বলতো বিয়ে করতে আমরা বিয়ে করে ফেলতাম। এখনের ছেলে-মেয়েদের আলাদাই ঢং।”
“আব্বা?”
আব্দুল হামিদের কথার মাঝখানে কথা পছন্দ নয়। জাওয়াদ এই প্রথম এই কাজ করলো। জাওয়াদের দিকে তিনি বিরক্তি নিয়ে তাকালেন। জাওয়াদ রয়ে সয়ে বললো,
“এতো তাড়াহুড়োর কি আছে? বিয়ে তো হাগা মুতার মতো সহজ কাজ না যে করে দিলাম কাজ শেষ! একটু সময় দেন। সময় তো পালায়ে যাচ্ছে না।”
জাওয়াদের কথা একেবারেই পছন্দ হলো না আব্দুল হামিদের। চেঁচিয়ে উঠলেন,
“অপদার্থ। তুই তোর বাপের সাথে কথা কইতাছোস। কি ভাষা এ? ছাগল কোথাকার। দিন দিন হাটুতে যাচ্ছে তোর বুদ্ধি। আমার তো সন্দেহ তোর আদৌ বিয়ে হবে কি না। শুধু ডিগ্রীধারী আর বড় কোম্পানিতে চাকরি করলেই হয় না। একটা আহাম্মক জন্ম দিছি।”
আব্দুল হামিদের রাশভারী স্বর গমগম করছে ঘরময়। জ্যোতি উঁকি দিয়ে দেখলো। আসার সাহস হলো না। জাওয়াদের আব্বার সাথে তর্ক করার ইচ্ছে হলো না। একেই শরীর ভেঙ্গে আসছে ক্লান্তিতে। চিংকির সাথে ঝগড়াতেই তার অনেক শক্তি অপচয় হয়েছে। এখন বাবার সাথে ঝগড়া করতে গেলেও শক্তির অপচয়। ঝগড়া করতে ইচ্ছেও করছে না। তাই সে কোনো উত্তর দিলো না। আব্দুল হামিদ চেঁচাতে চেঁচাতে ক্লান্ত হয়ে গেলে জাওয়াদ নিজের ঘরে চলে গেলো। জ্যোতি খেতে ডাকলেও সে বললো,
“খাব না।”
জ্যোতি একটু ঘুরঘুর করে বললো,
“ঝগড়া হয়েছে নাকি ভাবির সাথে?”
জাওয়াদ চোখের উপর হাত দিয়ে শুয়ে ছিলো। সাথে সাথেই উঠে বসলো। বিরক্তি নিয়ে বলল,
“কে ভাবি?”
“দীপশিখা ভাবি।”
“থাপড়া খাইছোস?”
“ওমা, তোমার বউ আমার ভাবি না।”
“মোটেই ওই দেমাগী মেয়ে তোর ভাবি না। আরেকবার ভাবি বললে থাপড়া দিয়ে দাঁত ফেলে দিব।”
জ্যোতি মিটিমিটি হাসলো। গুনগুন করে গাইলো,
“মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে, বাত্তির নিচে অন্ধকার।
এই জীবনে চাইলাম যারে, হইলো না সে আমার।।
মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে, বাত্তির নিচে অন্ধকার।
এই জীবনে চাইলাম যারে, হইলো না সে আমার।।”
গানটা শুনতেই নিজেকে সংযত রাখতে পারলো না জাওয়াদ। হাতের কুশন বালিশটা ছুড়ে মারলো জ্যোতির দিকে। জ্যোতি খি খি হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলো। জাওয়াদের বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বের হলো। মোবাইলটা হাতে নিলো। ফেসবুকে প্রবেশ করলো। স্ক্রল করতে করতে একটা ছবি সামনে এলো। জাওয়াদের হাত আটকে গেলো। কিছুসময় অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। ছবিটা দীপশিখার। মেলায় কেউ তুলেছে তার অগোচরে। সে পোস্ট করে তাকে ট্যাগ করেছে। জাওয়াদ ঠিক কতসময় ছবিটাকে দেখলো সে নিজেও বলতে পারে না। অজান্তেই সেভ করে নিলো ফোনে।
অনুভূতিটা খুব শান্ত ছিলো। কিন্তু অশান্ত হয়ে গেলো যখন দেখলো যে পোস্ট করেছে সেই মানুষটি একটি ছেলে। জাওয়াদের কপালে ভাঁজ পড়লো। সে ছেলেটির প্রোফাইলে ঢুকলো। ছেলেটির নাম “মুহাম্মুদ সুমন”। দীপশিখার সমবয়সী, তবে অন্য ডিপার্টমেন্টে পড়ে। দেখতে মোটামোটি গোঁছের। ছেলেটির প্রোফাইলে শুধু মেয়েদের ছবি। ভার্সিটিতে এমন অনেকেই থাকে। যাদের একটি ক্যামেরা থাকে। সেই ক্যামেরার একমাত্র উদ্দেশ্য মেয়েদের ছবি তোলা। এই সুমন ছেলেটাও সেই ক্যাটাগরির। তার প্রোফাইল ভর্তি মেয়েদের ছবি। আর খুব গলে যাওয়া ধরণের ক্যাপশন। জাওয়াদের সেখানেও সমস্যা হতো না। কিন্তু সে চিংকির ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছে, “মাই ব্লু ব্লোসম” পাশে নীল হার্ট। ব্যাস, মেজাজ ওখানেই বিগড়ালো। ছেলেটার সাহস কত! তার হবু বউকে ব্লু ব্লোসম বলে। প্রথমত চিংকি মোটেই ব্লু ব্লোসম না। সে চিংকি। আর যদি ব্লু ব্লোসম হয়ও তবুও সুমনের মত ছাগলের ব্লু ব্লোসম তো মোটেই নয়।
জাওয়াদ মোবাইলটা ছুড়ে মারলো। বালিশে মুখ গুজে শুয়ে পড়লো। ঘুমালে শান্তি লাগবে। সেখানেও গন্ডগোল বাজলো। ঘুম আসছে না। আধাঘন্টা এপাশ ওপাশ করেও লাভ হলো না। বিরক্তি নিয়ে উঠে বসলো সে। মোবাইলটা মেঝে থেকে কুড়িয়ে নিলো। ফ্রন্ট গ্লাস ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু সেদিকে তার মোটেই খেয়াল নেই। সে চিংকিকে ম্যাসেজ করলো,
“পৌছেছো?”
উত্তর এলো না। মেয়েটা দেমাগ দেখাচ্ছে। ঠিক আছে। কতসময় উপেক্ষা করবে? জাওয়াদ এবার ফোন দিলো তাকে। না মেয়েটা ধরছে না। এতো দেমাগ? জাওয়াদ তার মোটা ওভারকোটটা বের করলো। মাফলার জড়িয়ে বেরিয়ে গেলো। কতসময় ধরবে না?
এখন সে চিংকির বাড়ির নিচে এসে দাঁড়িয়েছে। অবশেষে ম্যাডাম ফোন ধরেছে। চিংকি ধীর স্বরে বললো,
“আমার আপনার সাথে কোনো কথা নেই।”
“সেটা বললে তো হবে না। আমার কথা আছে, কিন্তু ফোনে বলতে ইচ্ছে করছে না। তোমার মুখ আবছা লাগছে। নিচে এসো।”
চিংকির বিস্ময় আঁকাশ ছুলো। এই পাগল কি বলে? চিংকি খুব শান্ত স্বরে বললো,
“প্রথমত আমার আপনার সাথেই কথা নেই, তার উপর আপনি এই রাতে আমাকে নামতে বলছেন। মামা বাড়ির আবদার?”
“না, শ্বশুরবাড়ির।”
চিংকি চোখমুখ কুচকে ফেললো। লোকটি কি হাসলো? এই অবস্থায় তার মশকরা করতে ইচ্ছে হচ্ছে? চিংকি আশেপাশে তাকালো। কেউ কি রাস্তায় আছে? জাওয়াদ মৃদু হেসে বলল,
“আমি বাদে কোনো কুত্তাও নেই।”
“তাহলে আপনি কেনো এসেছেন?”
“কথা বলতে।”
চিংকি গলার স্বর সামান্য তুলে বলল,
“দেখুন জাওয়াদ সাহেব, আপনি যদি ভাবেন আপনি কোনো সিনেমার নায়ক ভুল ভাবছেন। আমি কখনোই নিচে আসবো না। বারান্দায় এসেছি সেটা কৌতুহল বশত। আর আপনার কথা শোনার আমার কোনো ইচ্ছে নেই। রাখছি।”
“তোমার ধারণাও নেই আমি কত জেদি, তুমি না আসলে আমি সারারাত এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো। ঠান্ডায় জমে আইসক্রিম হয়ে যাবো। সকালে যখন মানুষ দেখবে একটা জলজ্যান্ত মানুষ আইসক্রিম হয়ে গেছে, তখন জানাজানি হবে, ফেসবুকে ছবি দিবে, ভাইরাল হয়ে যাবো। বাংলাদেশে কিছু ভাইরাল হলে সেটা নিউজ হয়। আমাকে নিয়েও নিউজ হবে। যেহেতু তোমার বাড়ির নিচে আইসক্রিম হয়েছে সেই দায় তোমার উপর পড়বে। জ্যোতি সাক্ষী দিবে। আমার আব্বাও তোমার বাবাকে ছেড়ে দিবে না। বুঝে নাও।"
এই লোক কি বলে? এতো রীতিমতো হুমকি। চিংকি চোয়াল ঝুলে গেলো। হিনহিনে স্বরে বললো,
“যা খুশি করেন। আমি নিচে আসছি না।”
বলেই ফোন কেটে দিলো। তারপর ঘরের ভেতর চলে গেলো। চিংকি তো তাকে দাঁড়াতে বলেনি। নিজের ইচ্ছেতে দাঁড়িয়ে আছে। থাকুক।
*****
একটু পর পর পর্দার ফাঁক থেকে সাবধানতার সাথে উঁকি দিচ্ছে চিংকি। কোনোভাবেই ধরা পড়তে চায় না। উদ্দেশ্য জাওয়াদকে দেখা। লোকটার মাথা কি সত্যি সত্যি নষ্ট? এই কনকনে ঠান্ডায় সে দাঁড়িয়ে আছে পকেটে হাত দিয়ে। এর মাঝেই তরঙ্গিনী ছুটে এলো। একপ্রকার জেরা করা ভাষায় বললো,
“জাওয়াদ নিচে দাঁড়ায়ে আছে কেন?”
“জানি না।”
“ছাগলটাকে যেতে বল।”
“বলেছি, শুনে না।”
অসহায় স্বরে বলল চিংকি। তরঙ্গিনী শুধালো,
“কি চায়?”
“কথা বলবে, তাও সামনাসামনি। এই রাতে আমাকে নিচে যেতে বলে। পাগল লোক।”
তরঙ্গিনী থুতনিতে হাত দিয়ে কিছুসময় ভাবলো। তারপর গম্ভীর স্বরে বললো,
“তুই ওর সাথে দেখা করে আয়।”
“পাগল তুমি? এই রাতে? বাবা-মা কি ভাববে?”
“সকালে ছাগলটা নিউমোনিয়ায় ভুগলে বাবা-মা কি ভাববে? বলি যায়ে দেখা করে আয়। ভুলায়ে ভালায়ে বাড়ি পাঠা। নয়তো দেখা যাবে ছাগলটা সত্যি সত্যি সারারাত দাঁড়িয়ে থাকলো! পাশের বাড়ির আংকেল সকাল পাঁচটায় নামাযে বের হন। উনি দেখলে সর্বনাশ হবে। কথা শোন বোন আমার। ঘর সামলে নিচ্ছি। বাবা-মা এখন ঘুমিয়ে যাবে। তুই যাবি আর আসবি। ব্যাস।”
তরঙ্গিনীর যাবি আর আসবি টুকু আর যাবি আসবির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না। চিংকি নিচে যেতেই জাওয়াদ নিজের মাফলারটা খুলে তাকে গলায় পেঁচিয়ে দিলো। একটা এক্সট্রা হেলমেট পড়িয়ে দিলো চিংকিকে। চিংকি অবাক স্বরে বলল,
“এগুলো পড়াচ্ছেন কেন?”
“আমরা নাইট আউটে যাচ্ছি।”
“পাগল আপনি?”
দীপশিখার কথার উত্তর দিলো না সে। চিংকির মোবাইলটা নিয়ে তরঙ্গিনীকে ফোন দিলো। তরঙ্গিনী ধরলেই বলল,
“আপু, আপনার বোনকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাচ্ছি। চিন্তা করবেন না। সকাল হবার আগেই দিয়ে যাব।”
তরঙ্গিনী কি বলবে বুঝে পেলো না। জাওয়াদের দিকে কড়া চোখে তাকালো চিংকি। রাগী স্বরে বললো,
“এসব কি? ফাজলামি করছেন?”
“না, তোমাকে শাস্তি দিচ্ছি। তখন রাগ দেখিয়ে আমার প্লান ভণ্ডুল করে দিয়েছো তুমি। তাই শাস্তি তার প্রাপ্য।“
“আমি কোথাও যাবো না।”
“তুলে নিয়ে যাব।”
খুব আস্তে বললো জাওয়াদ। দীপশিখা কম জেদি নয়, সেও যাবে না। জাওয়াদ মৃদু হেসে তাকে কোলে তুলে নিলো। চিংকি হাত পা ছুড়লো লাভ হলো না। জাওয়াদ তাকে বাইকে বসালো। চিংকির ছটফটানি দেখে জাওয়াদ স্বর খাদে নিয়ে বলল,
“দীপশিখা, আমি কিন্তু তোমার ছটফটানি থামানোর উপায় জানি। উপায়টা তোমার পছন্দ হবে না, তাই ভদ্র মেয়ের মতো বসো।
.
.
.
চলবে..........................................................