এক কোণায় গোপনে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষটি হতেও বোধহয় পাতা ঝরে পড়লো ভীষণ নীরবে। প্রিয় পাতাটিকে হারানোর শোক ডালের ভেতর দেখা গেলো না। হয়তো তার শক্ত খোলসের অন্তরালে সকল অনুভূতি লুকিয়ে ফেলেছে নিবিড়ে। এই দুনিয়া জানতেও পারলো না, আপন কিংবা প্রিয় কিছু হারানোর কষ্ট আমৃত্যু।
রাজমহলের সামনে সময়টুকু যেন স্থির হয়ে গেলো। স্থবির প্রতিটি প্রাণ। যামিনী আর মেনে নিতে পারলো না অতি বিস্ময়কর কথাখানা। তাই অন্তরের কৌতূহল অন্তরেই চাপিয়ে না রেখেই শুধালো,
"সখী, রেবেকার অপরাধ কী? ওকে বেঁধে ফেলার নির্দেশ দিয়েছো কেন?"
কামিনীর চোখে অফুরন্ত তেজ। কণ্ঠে প্রচণ্ড গর্জন,
"রানি কামিনী কখনো অকারণে কাউকে শাস্তি দেয়নি, সখী। তা তো তুমি জানোই।"
"জানি বলেই তো জিজ্ঞেস করলাম ওর অপরাধ কী?"
রানি হ্যাব্রোকে আবার নির্দেশ দিলেন, "হ্যাব্রো, আমি এক কথা দ্বিতীয়বার বলতে পছন্দ করি না তা কি তুমি অবগত নও?"
হ্যাব্রো আর অপেক্ষা করল না। কালবিলম্ব না করেই দড়িটি নিয়ে এগিয়ে গেলো রেবেকার সামনে। রেবেকার মুখাবয়বে কোনো ভীতি নেই। নেই কোনো আফসোস কিংবা বাঁচতে চাওয়ার আকুতি। যেন এই অবধারিত শাস্তিকে সে অকপটেই মাথা পেতে নিলো। এই শাস্তি তার কাছে কোনো ব্যাপারই না।
হ্যাব্রো নীরবেই বাঁধলো রেবেকাকে। রানি খুব গাঢ়, গভীরে নিখুঁত ভাবে খুঁটিয়ে দেখলেন রেবেকাকে। রেবেকার এই অসীম দুঃসাহস, নিজের অপরাধের প্রতি একাত্মবোধ দেখে রানি কামিনীর হিংস্র রাগ ডাল-পালা ছড়ালো।
"সখী ভিতরে যাও। আমি আসছি। সকল দাসদাসীদের বৈঠকখানায় একত্রিত হতে বলো। আমার কথা আছে।"
"সখী৷ আমাকেও তোমার সঙ্গে নিয়ে চলো।"
"না, তুমি মহলে থাকো। আমি শীগ্রই ফিরবো।" যামিনীকে আশ্বস্ত করেই ঘোড়ার দড়িতে টান লাগালেন রানি কামিনী।
রাজ ঘোড়া তার তীব্র ডাকের আনুষ্ঠানিকতা পালন করল। রানি হ্যাব্রোকে পেছনে আসার নির্দেশ দিয়েই ঘোড়ার গতি বাড়ালেন। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম হলো সেই গতি। দাঁড়িয়ে থাকা রেবেকা উযোয়ার মুখ থুবড়ে পড়লো মাটিতে। ঘোড়ার সাথে সাথে সে-ও যেতে লাগালো। দড়িটা তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে লাগলো। কী অসহ্যকর যন্ত্রণার দৃশ্য! সকল দাসদাসী মুখ চেপে ধরলো। এত ভালো দাসীর এই পরিণতিতে মনে মনে অনেকেই হলো রানির প্রতি ক্ষুব্ধ। রানির এহেন অমানবিকতা বড়ো দৃষ্টিকটু এবং নিন্দনীয় বলে গন্য হলো। তবে তা মুখ ফুটে বলল না কেউ। বলার সাহসও কারো নেই। অকালে প্রাণ কেই-বা হারাতে চায়? যে রানি নিজের সবচেয়ে পছন্দ, প্রিয় দাসীর এমন অবস্থা করতে পারেন তার কাছে বাকি সব তুচ্ছ।
রানির ঘোড়া চলে গেলো দৃষ্টি সীমানার বাহিরে। তার পেছন পেছন নিজের ঘোড়ায় ছুটলো হ্যাব্রো কয়েকজন দেহরক্ষীকে নিয়ে।
টগবগ শব্দটি ধীরে ধীরে মুছে গেলো। কেবল পথের পানে রয়ে গেলো রেবেকার শাস্তির চিহ্ন, দাগ।
নাথানকে ঝুলিয়ে রাখা স্থানটিতে এসে রানির ঘোড়া থামলো। এই মাঝ রাতে পুরো একটি অঞ্চল জুড়ে রাজ ঘোড়া এই ধ্বনির জানান দিলো যে রানি কামিনী ঘুরে বেড়াচ্ছেন চারপাশে। প্রজাদের ভেতর কেউ কেউ ঘর ছেড়ে বাহিরে এলো। কেউ কেউ বা খিড়কি খুলো মুখ বাড়িয়ে তাকিয়ে থেকে বুঝার চেষ্টা করলো হচ্ছেটা কী!
মোটামুটি রাতের এই অর্ধ প্রহরেও প্রজাদের জমায়েত হয়ে গেলো।
রানি ঘোড়া থেকে নামলেন রাজবেশে। ঘোড়ার পেছনে দড়ি দিয়ে আবদ্ধ থাকা রেবেকার মোটামুটি নাজেহাল অবস্থা। তবুও মুখে নেই রা টুকু। রানি হ্যাব্রোকে নির্দেশ দিলেন রেবেকাকে নাথানের সামনে নিয়ে দাঁড় করানোর।
নাথান তখন প্রায় অবচেতন। সারাদিন এতটা বেত্রাঘাতের পরে হুঁশ না থাকাটাই স্বাভাবিক। তবুও রানির কণ্ঠ তার কর্ণগোচর হতেই সে নিভু নিভু ভঙ্গিতে চোখ তুলে তাকালো। আবছা ভাবে রেবেকাকে দেখতেই চমকে গেলো। এই ভেঙে আসা শরীরেও সে আপ্রাণ চেষ্টা চালালো চোখ মেলে রাখার। কিন্তু ব্যথায় জর্জরিত শরীরটা তার মনের কথা শুনতে নারাজ।
রেবেকাকে নিয়ে নাথানের সামনে দাঁড় করানো হলো। নাথানের পুরোপুরো সামনেই কয়েক হাত দূরত্বে। রেবেকার পিঠের দিকের পোশাকটুকু ছিঁড়ে যা-তা অবস্থা। পিঠ কেটে-ছিঁড়ে রক্ত পড়ছে কয়েক জায়গায়। ধূলোবালিতে শরীর মেখে একাকার।
রানি প্রজাদের দিকে এক পলক তাকালেন। সকল বয়সীর মানুষই মোটামুটি উপস্থিত হয়ে গেছে ততক্ষণে। রানি ভালো করে চোখ বুলিয়ে বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠে বললেন,
"বাচ্চাদের এখান থেকে সরাও দ্রুত। ওদের ঘরে পাঠাও।"
রানির নির্দেশ কে করবে অমান্য? মহিলাদের ভেতর বেশ কয়েকজন নিজেদের বাচ্চাদের নিয়ে ঘরের ভেতর চলে গেলেন। রানি এবার তার নূপুরের রুনুঝুনু নাদ নিয়ে এগিয়ে গেলেন রেবেকার ঠিক কাছে। রেবেকার চোখ-মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন বেশ অনেকটা সময়। এই ঠান্ডা, শীতে জড়ানো রাতেও মেয়েটার শরীর ঘেমে-নেয়ে একাকার।
রানি এবার প্রজাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, "রাজ্যবাসী, এই মাঝরাতে আপনারা এখানে জড়ো হয়ে খুবই উত্তম কাজ করেছেন। আপনাদের আমি কিছু দেখাতে চাই।"
প্রজাদের মাঝে ছড়িয়ে গেলো উৎকণ্ঠা। রানি কী দেখাবে তা ভেবেই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো সকলে।
রানি একটিবার নাথান এবং রেবেকাকে দেখে নিয়ে অতঃপর নিজের পোশাকটির পেছন থেকে নিজের জনপ্রিয় তলোয়ারটি বের করে খানিকটা ঢুকিয়ে দিলো রেবেকার পেটের একদম ডান দিকটাই। রেবেকা এবার সামান্য আর্তনাদ করে উঠলো। ব্যথায় কুঁচকে এলো তার চোখ-মুখ। এরপর মুহূর্তেই নিজের যন্ত্রণায় কাতর আর্তনাদটিকে গিলে ফেললো মেয়েটা কী অভিজ্ঞ উপায়ে! তার এই কৌশলে হাসলেন রানি। এবার বাঁদিকটাতেও একই পদ্ধতিতে তলোয়ার খানিকটা ঢুকিয়ে দিলেন। রেবেকা আবার আর্তনাদ করে উঠল। এবার তার চোখ-মুখে ছড়িয়ে পরলো ভীতি। যা দেখার জন্যই রানি এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন।
এবার তিনি প্রজাদের দিকে তাকিয়ে প্রজাদের উদ্দেশ্যে বললেন, "আমার খাঁসদাসী রেবেকা উযোয়ারকে আমি কেন আঘাত করছি তা-ই তো জানার জন্য আপনারা অপেক্ষা করছেন তাই না? বলছি শুনুনু; রেবেকা উযোয়ারের সাথে নাথানের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এবং সেই সম্পর্কের জের ধরে সে প্রতিশোধপরায়ণা হয়ে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। সে ভুলে গিয়েছে, রানি কামিনীকাঞ্চনের সাথে থেকেই তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা সহজ নয়। এবং সম্ভবও নয়। রেবেকা আমার খাসদাসী হিসেবে খুব বিশ্বস্ত ছিলো। এবং সে আমার এই বিশ্বাসকে ভেঙে বড্ড ভুল করেছে। আপনারা সবাই জানেনই, এই রাজ্যে সবকিছুর ক্ষমা হলেও নারীর প্রতি অন্যায় এবং কারো সাথে করা বেইমানির কোনো ক্ষমা নেই।"
রেবেকা হাত দু'টো জোর করলো। করুণ মিনতি করে বলল,
"আমার ভুল হয়ে গিয়েছে, রানি কামিনী। আপনি আমার এই ভুল মার্জনা করুন। আমি এই রাজ্য থেকেই পালিয়ে যাবো। তবুও আমাকে ছেড়ে দিন।"
রানি হ্যাব্রোর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলেন। এরপর স্পষ্ট কণ্ঠে নির্দেশ দিলেন,
"ঠিক এই মুহূর্তে নাথানের শেষ শাস্তিটুকু সম্পন্ন করো, হ্যাব্রো। এত প্রেম রেবেকার নাথানের প্রতি যে সে নাথানের অন্যায় না দেখে কেবল প্রেমে অন্ধ হয়ে রইলো। তাই রেবেকার চোখের সামনে নাথানের কঠিন শাস্তিই হবে রেবেকার শিক্ষা।
রেবেকা ছুটে এসে রানির পা জড়িয়ে ধরলো। ভিক্ষা চাইলো নাথানের প্রাণ। কিন্তু রানি তার কথাতেই অটুট রইলেন। হ্যাব্রো আর এক মুহূর্ত ব্যয় না করেই এক কোপে নাথানের দেহ থেকে নাথানে্ উলঙ্গ পুরুষাঙ্গটি আলাদা করে ফেললো। নাথান পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আর্তনাদ করেই গা ছেড়ে দিলো। বন্ধ হয়ে এলো তার চোখের পাতা। গলগল করে পড়া রক্তে ভেসে গেলো অশ্বত্থ বৃক্ষের চারপাশটা। রেবেকা জ্ঞান হারালো। প্রজাদের মাঝে কেউ কেউ এই লোমহর্ষক দৃশ্য দেখে বমি করে ভাসিয়ে দিলো। কেউবা মাথা ঘুরে পড়ে গেলো সেখানটায়। বাকিরা ছোটাছুটি শুরু করলো আতংকে। হ্যাব্রোর মতন সাহসী সেনাপতিও চোখ নামিয়ে নিলো। তার গায়ে বয়ে গেলো শীতল স্রোত।
এই এত ভয়াবহতার মাঝেও যিনি রইলেন ঠাঁই দাঁড়িয়ে, নড়লো না একফোঁটাও, তিনি হলেন- রানি কামিনী। কোন ভয়, ভীতি যেন ছুঁতে পারলো না তাকে। বরং এমন নিষ্ঠুর বিচারে তিনি স্বস্তি পেলেন। বরাবরই বিশ্বাসঘাতকদের দেখলে তার রক্ত টগবগ করে ফুটতে থাকে। তার জীবনে বিশ্বাসঘাতকদের কোনো জায়গা নেই। কোনো মায়া নেই।
*
শীতল অম্বরে একখানি চন্দ্রিমার উদয় ধরাকে কেমন উজ্জ্বল করে দেয়! ফিনফিনে বাতাস গা ছুঁয়ে দিয়ে রাতটিকে আরও গভীর ও আপন করে নেয়। রানির এই রাত বড়ো প্রিয়। প্রিয় এই রাতের আকাশ আর জোছনা। তিনি একা জোছনায় নিবিড়ে দাঁড়িয়ে থাকতেই ভালোবাসেন ভীষণ।
বরাবরের ন্যায় আজও রানি রাজমহলের বিশাল খোলা বারান্দায় এসে বসলেন। বারান্দাটায় তার পছন্দমতো আরামকেদারা আছে, আছে একটি গোলাকার টেবিল। রানি প্রায় বেশির ভাগ রাতই এখানে কাটান। মদ্যরসের নেশায় ডুবে গিয়ে তাকিয়ে থাকেন আকাশের দিকে। অম্বরের সাথে হয় তার গভীর হিসেবনিকেশ।
রানির হাতে তখন সুডৌল পিতলের পাত্রটি। অনেকটা মদ্য পানের পরেও আজ লাল নেশায় বুঁদ হতে পারছেন না তিনি। চোখ বন্ধ করলেই চোখের পাতায় ভেসে উঠে অপরিচিত সেই পুরুষটির মুখের আদল। সেই জ্বলজ্বল করা ঘোলাটে চোখ। ঘোড়ার কেশরীর মতন সোনালী চুল। সেই অতি শুভ্র রঙের দেহটি। চতুরতায় টইটুম্বুর এই পুরুষটি রানির মাথায় যেন বড়ো যত্ন করে বসে পড়েছে। কোনো মতেই রানি তাকে মাথা থেকে দূর করতে পারছেন না।
ভাবনার মাঝেই জড়োয়া গহনার মৃদু ছন্দ রানির কানে এসে লাগলো। কিন্তু তিনি চোখ কিংবা ঘাড় কিছুই ঘুরালেন না। ঠাঁই বসে থেকেই প্রশ্ন ছুঁড়লেন,
"সখী, ঘুমাওনি কেন?"
যামিনী ততক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে রানির কাছটায়। একদম পাশাপাশি। মৃদু স্বরে জবাবে বলল, "তুমিও ঘুমাওনি তো!"
"এ কি আর নতুন কিছু? আমি তো প্রায়ই রাত জাগি।"
যামিনী এবার কামিনীর পাশ ঘেঁষে বসলো। কামিনীর বাহুতে উষ্ণ ছুঁয়ে মর্মাহত স্বরে বলল,
"আমি জানি সখী, তুমি ভীষণ দুঃখ পেয়েছো রেবেকার এহেন কাজে। রেবেকার মতন মানুষও তোমাকে মারতে চাইলো শেষমেশ, তা বড়োই যাতনার।"
"দুঃখ! তা আবার কী শুনি? রানি কামিনীর দুঃখ নেই তা কি জানো না তুমি?"
যামিনীর কণ্ঠ কাঁপলো। ক্রন্দনরত স্বরে বলল, "তুমি রাতের খাবারটাও খাওনি। প্রতিদিন রেবেকে তোমাকে খাবার গুছিয়ে দেয়। পাশে দাঁড়িয়ে থাকে পুরোটা সময়। এই স্মৃতি নিয়ে তুমি খেতে পারোনি তা কি ভেবেছো আমার থেকে লুকানো যায়?"
কামিনী দূরে ছুঁড়ে মারল মদের পাত্রটি। নিশীথি রাত্তিরের বুকে ঝনঝনিয়ে শব্দ তুললো সেই পাত্রটি। বিশ্বাস ভাঙার পর যেমন করে ভেঙে চুরমার হয়েছিলো রানির এক খণ্ড সতেজ হৃদপিণ্ডটা।
চাঁদের জোছনায় চিকমিক করে উঠলো রানির অশ্রুসজল নয়ন যুগল। পুরো পৃথিবীর কাছে খরার মতন শুকনো নারীটি এই জোছনায় কেঁদে উঠল। যামিনীকে জাপ্টে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল,
"আমি বড়োই কঠিন তাই না, সখী? এজন্য ভালোবাসা যায় না আমাকে। আমি কি পৃথিবীর বুকে বড্ড ঘৃণার! সবাই কেন আমার প্রতি এত নির্দয় হয়? আমারও ভালোবাসা চাই, সখী। আমারও ভালোবাসা চাই।"
নেশায় বুঁদ হয়ে গিয়েছেন রানি তাই তার লুকায়িত দুঃখের কাহন বেরিয়ে এলো সখীর সামনে। যামিনী আগলে নিলো কামিনীকে। দীর্ঘশ্বাসে ভরে গেলো মহলের দম্ভের প্রাচীর।
৭.
রানির ঘুম ভাঙতেই চোখের উপর উদয়মান সূর্য বড়ো জ্বালাতন করলো। তবে মিহি ঠান্ডায় এই সূর্যটির উষ্ণতা আরাম বোধ করলো। চোখ মেলে তাকাতেই কানের কাছে পালক ঝাপটানোর শব্দ শোনা গেলো।
রানি অতি আশ্চর্য হয়ে তাকাতেই দেখলো তার কক্ষের একটি কোনায় সাদা রঙের একটি পায়রা পালক ঝাপটাচ্ছে। খাঁচার ভেতর এদিক থেকে সেদিক উড়ছে। মুক্তি পাওয়ার কী বায়না তার। রানি তড়িৎগতিতে উঠে বসলেন। পায়রটা উনার ভীষণ পরিচিত। গতকাল রাতেই তো এই পায়রার উদ্দেশ্যে তিনি তীর তাঁক করে ছিলেন!
রানি দ্রুত উঠে গিয়েই খাঁচাটির সামনে গেলেন। নীলাভ একটি ছোটো কাগজ খাঁচাটির ছিটকিনিতে আটকানো। রানি কাগজটি আগ্রহ নিয়ে তুললেন। খুলতেই কী সুন্দর হাতের লেখা ভেসে উঠল,
"যেই মুক্ত পায়রাকে শিকার করবেন বলে তীর মারবেন ভেবেছিলেন, সেই পায়রা আজ থেকে আপনার। দেখি কেমন তীর মারতে পারেন। শুনেছি, কাছে থাকা জিনিসের বুকে আঘাত করা যায় না। মায়ার বলে। এবার দেখুন তো, আপনার মায়া কতটুকু!"
.
.
.
চলবে............................................................