স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা - পর্ব ২১ - মুশফিকা রহমান মৈথি - ধারাবাহিক গল্প


“আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি নিজের ব্যক্তিগত পৃথিবীর মানুষ ছাড়া কারো প্রতি রাগ, ঘৃণা, অভিমাণ পুষে রাখতে পারি না। আর আপনি আমার পৃথিবীর কেউ নন জাওয়াদ সাহেব, তাই আমার আপনার প্রতি ঘৃণা, রাগ, অভিমান, অভিযোগ কিছুই নেই। আশাকরি, আপনি আপনার উত্তর পেয়েছেন। আর একটা কথা জাওয়াদ সাহেব, আমি চাই না আপনার এবং আমার দেখা হোক। ব্যপারটা আমার জন্য বিরক্তিকর।”

শান্ত, শীতল, সাঁড়াশির ন্যায় স্বর। জাওয়াদ স্থবির নয়নে তাকিয়ে রইলো। এমন কিছুই তো হবার কথা ছিলো! নাকি সে মনে মনে ভিন্ন কিছু কল্পনা করে রেখেছিলো। ভেবেছিলো মেয়েটি হয়তো সাপসাপান্ত করবে, হয়তো চোখে মুখে তীব্র ঘৃণা নিয়ে তাকাবে অথবা—অথবা উজার করে দিবে অভিমানের দলামচা করা শব্দগুলো। কিন্তু তেমনটি তো হচ্ছে না। তাদের গল্পটা আবার সূচনাপত্রে যেয়ে ঠেকলো। না না, তার চেয়েও খারাপ। তাদের গল্পটা আর নেই। পাতাগুলো খোয়া গেছে। চিংকি আবার শীতল স্বরে বললো,
 “আশাকরি আমাদের আর দেখা হবে না। আসছি..।”

জাওয়াদ তার দিকে ব্যথিত নয়নে তাকিয়ে আছে। কি অদ্ভুত যন্ত্রণা। কেমন যন্ত্রণা তো কখনো হয় নি। ভেতরটা চুরমার হয়ে যাচ্ছে, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। হাঁসফাস লাগছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। চোখ জ্বলছে। অন্তস্থল পুড়ছে। তার দীর্ঘশ্বাসটুকু স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। অদ্ভুত বিষাদ তাকে চেপে ধরেছে। অথচ দুঃখ পাবার তো কিছু নেই। চিংকি তাকে নিজের জীবন থেকে বাতিল করে দিবে এটাই কি হবার কথা নয়? বরং এজন্যই তো বিয়েটা ভাঙ্গা। তাহলে কেন এতোটা অসহ্য লাগছে? চিংকি দাঁড়ায় নি। সে চলে যাচ্ছে। একটা সময় ভিড়ের মধ্যে মেয়েটি মিলিয়ে গেলো। তার ক্রিম কালারের ওড়নাটাও মিশে গেলো। জাওয়াদ এখনো দাঁড়িয়ে আছে। তাকে ডাকছে তার কলিগরা। কিন্তু কানে আসছে না কিছুই।

********

অনেকটা হেটে সামনে এসে ধপ করে হাটু ভাঁজ করে বসে পড়লো চিংকি। তার চোখ থেকে অশ্রুরা বেসামাল ভাবে গড়াচ্ছে। ভেবেছিলো নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে। ভুল ভেবেছে। তার হৃদয় এখনো মানুষটাকে ভুলে নি। এখন তার ভাবনা গুলো স্যাঁতসেঁতে হৃদয় আগলে রেখেছে। তাই তো তার দেওয়া আঘাতে সে কষ্ট পাচ্ছে। নিজেকে শক্ত রাখার নাটক করেছে মাত্র। যেন ঐ মানুষটি তাকে দূর্বল না ভাবে তাই কঠিন আদলে ছিলো। কিন্তু এখন যখন তার দৃষ্টিসীমার বাহিরে চলে এসেছে পা কাঁপছে। শিরা উপশিরায় এক বেদনার স্রোত বইছে যেন। নিজের বেহায়া হৃদয়টাকে খুব করে গালমন্দ করতে ইচ্ছে করছে। এতো অপমানের পর কেনো যে বাড়ে বাড়ে দূর্বল হচ্ছে। যার জীবনে তার স্থান নেই, তার মনে তার প্রতি ভালোবাসা নেই; তার কাছে কেন ভালোবাসার আর্জি পাঠাতে হবে। তার জন্য কেন ব্যকুল হতে হবে! যখন জাওয়াদ তার হাত টেনে ধরলো চিংকি বুকটা ধক করে উঠলো। শরীর কাঁপলো। চোখের সম্মুখে তার কাতর মুখখানায় ভেতরটা হুহু করে উঠলো। মনে হচ্ছিল তার হাত-পা অসাড় হয়ে যাচ্ছে। শক্ত থাকার অভিনয়টা করতে তার কতটা কষ্ট হয়েছে কেবল সেই জানে। 
 “আম্মার কি শরীর খারাপ?”

এক বৃদ্ধের ভাঙ্গা স্বরে সৎবিৎ ফিরলো চিংকির। ফ্যালফ্যাল করে চাইলো সে। বৃদ্ধ চিন্তিত স্বরে শুধালো,
 “রিক্সায় যাবেন?”

চিংকি চোখ মুছলো, মাথা নাড়িয়ে না জানালো। তারপর উঠে দাঁড়ালো। মন্থর গতিতে হাটতে লাগলো সে। নিজেকে গুড়িয়ে দিলেও হয়তো এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই। হৃদয়ে চিরটাকাল এই যন্ত্রণাটা রয়েই যাবে।

**********

ফাল্গুনের আগমণে ইট পাথরের শহর থেকে শীত বিদায় নেবার সাথে তীব্র গরম হানা দিলো। মারাত্মক গরম। সূর্যের দাবদাহে নগরবাসী হাঁপিয়ে উঠেছিলো। ঠিক তখনই পশ্চিম দিকে কালো মেঘেদের অনশন ঘটলো। অভিমানী কিশোরীর মতো তারা চোখ মুখ অন্ধকার করে জড়ো হলো যেন। আকাশের রঙ্গ পাল্টালো। কৃষ্ণ আকাশ নিকষ কৃষ্ণ রুপ ধারণ করলো। চাঁদটাও গিলে ফেললো। বাতাসের বেগ বাড়লো। সেই সাথে বাড়লো অস্থিরতা। পাতাগুলো ঝড়ের বার্তা পেয়ে মরমর করে উঠলো। মেঘের গর্জনে কাঁপলো ধরনী। ধুলিকণা কুন্ডলী আকাশে উড়তে লাগলো। ঝড়ের গান গাইতে গাইতেই নামলো মুষলধারে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি ধুলো ভিজিয়ে কাঁদায় পরিণত করলো। আকাশ-বাতাস একাকার হয়ে গেলো বছরের প্রথম কালবৈশাখীর তান্ডবলীলায়। এর মাঝে ভিজে জুবুথুবু হয়ে বাড়ি ফিরলো জাওয়াদ। প্রস্তুতি ছিলো না ঝড়ের। ফলে মাঝরাস্তায় বিপাকে পড়তে হলো। কিন্তু সে নির্বিকার। প্যান্টের নিচে কাঁদা লেগে আছে। জ্যোতি জানে তার ময়লা-নোংরা অপছন্দ। অথচ তাকে ব্যস্ত হতে দেখা গেলো না। সে জুতো খুলে ক্লান্ত শরীরে বাসায় ঢুকলো। অথচ অন্যদিন হলে প্রথমে যেত বাথরুমে। জামাকাপড়, হাত-পা পরিষ্কার করে গালমন্দ করতে করতে সে প্রবেশ করতো। আব্দুল হামিদ সাহেব ওখানেই ছিলেন। খবরের কাগজে ভালো খবর খোঁজার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ছেলের উদ্দেশ্যে বললেন,
 “কাল মামা বাড়ি যেও। একুন ভালো পাত্রীর সন্ধ্যান পেয়েছেন তিনি। তোমাকে যেতে বলেছেন, বায়োডাটা সমেত। তার মোবাইলটা হারিয়ে সব গন্ডগোল হয়ে গেছে। মানুষ এখন অমানুষ হয়ে গেছে। মসজিদ থেকেও চুরি করছে। ছে ছে। মসজিদ আল্লাহর ঘর, সেখানে মানুষ আসে আল্লাহকে ডাকতে। আর এই অমানুষগুলো সেখানে যায় চুরি করতে। বেচারার এক লক্ষ টাকার আইফোন। দুঃখে সে ব্যকুল হয়ে আছে। একটু সান্ত্বনা দিও পারলে। তোমাকে দিয়ে একটা মেইলও লেখাবেন তিনি। বুড়ো হয়ে চোখে কম দেখছেন। তুমি কিন্তু যাবে।”
 
জাওয়াদ উত্তর দিলো না। ফলে তিনি রুষ্টস্বরে বললেন,
 “তুমি কি শোনোনি আমি কি বলেছি?  

জাওয়াদের চোখ তখন গেলো, জুতোর থাকের পাশের ময়লাঝুড়িতে। স্তুপকৃত ময়লার মাঝে সেখানে র‍্যাপিং এ মোড়ানো একটি বাক্স। সে সাথে সাথেই সেটা হাতে নিল। এটা চিংকির দেওয়া উপহার। ড্রয়ারে রেখেছিলো সে এটা এখানে কেন। সাথে সাথে রুদ্রস্বরে শুধালো,
 “এটা এখানে কে ফেলেছে?”

জ্যোতি থতমত খেলো। বাবার দিকে তাকালো ভয়ার্ত দৃষ্টি। হামিদ সাহেব স্বাভাবিক স্বরে বললেন,
 “পর-নারীর জিনিস রেখে তো লাভ নেই, বিয়ে ভেঙ্গেছে সুতরাং সম্পর্কের ইতি। তাই আমি বলেছি আবর্জনা বিদায় করতে।”

জাওয়াদের মুখভাব বদলে গেলো। ফর্সা মুখখানা রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো। চোখজোড়া ক্রোধে ধিকধিক করে জ্বলছে। চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো। স্বভাব বহির্ভূত একটা কাজ করে বসলো সে। বাবার বাধ্য জাওয়াদ চিৎকার করে উঠলো বাবার উপর-ই,
 “আমার জিনিসে হাত দেবার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমি এটা ফেলবো কি না?”
 
জাওয়াদের রুঢ় আচারণে আব্দুল হামিদ হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। তার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। কি বলবেন বুঝতে পারছে না। জাওয়াদ হুংকার ছেড়ে জ্যোতিকে বললো,
 “আরেকবার আমার জিনিসে হাত দিলে তোর হাত ভেঙ্গে ফেলব। কথাটা মনে থাকে যেন।”

বলেই হনহন করে নিজ ঘরে চলে গেলো সে। তার এমনরুপে স্থবির হয়ে গেলো জ্যোতি এবং আব্দুল হামিদ। জাওয়াদের মত শান্ত ছেলের এমন অগ্নিশর্মারুপের কারণ বোধগম্য হলো না।

***********

প্যাকেটটা খোলা হয়নি কখনো। ড্রয়ারের এক কোনে রেখে দিয়েছিলো জাওয়াদ। অথচ আজ খুলতে ইচ্ছে করছে। র‍্যাপিংটা খুললো খুব যত্নে। ময়লার প্রতি আজ ঘিনপিত্তে নেই। ঘড়িটা ভেঙ্গে গেছে। মেয়েটি অনেক আবেগ নিয়ে ঘড়িটি কিনেছিলো তাতে সন্দেহ নেই। সেই আবেগের স্পর্শ এখনো লেগে আছে তাতে। প্যাকেটের একদম নিচে একটি চিরকুট। চিরকুট পড়া হয় নি জাওয়াদের। আজ পড়তে ইচ্ছে করছে।

“এই যে জাওয়াদ সাহেব,
 ভালো আছেন? শুধু শুধু উপহার দিতে ইচ্ছে করছিলো না। ভালোবাসা দিবসের উপহার হওয়া উচিত ভালোবাসার সাথে। কিন্তু ভালোবাসা জাহির করার ভাষা যে আমি পারি না। আপনি কি জানেন, আপনাকে নিয়ে লিখতে গেলে আমি শব্দ খুঁজে পাই না। মনের মধ্যিখানে অবাধ জোয়ার হানা দিলেও আমি ভাষাহীন হয়ে পড়ি। আমি এখন শব্দ হাতড়াচ্ছি। কি যন্ত্রণা দেখুন তো! মনের কথা বলতেও এতো জ্বালা, জানা থাকলে এসবে নিজেকে আটকাতাম না। অবশ্য আমি কিন্তু নিজ থেকে এসবে জড়াই নি। এমনি এমনি সব হয়ে গেলো। বুঝতেই পারলাম না। নিজেকে শতবার আটকাতে চাইলাম, পারলাম না। আমার নির্লজ্জ চোখখানা আপনার দিকে তাকিয়ে রয়, মনে হয় সময় থেমে যাক। আমি তাকিয়েই থাকি। এই দেখার যেনো শেষ না হয়। 
আমি একদম আপনার প্রেমে পড়তে চাইনি বুঝলেন। কিন্তু ছয় বছর আগের কিশোরীকে কড়া শাসনে রাখলেও এই অসহ্য, বেসামাল মনকে কি করে শাসন করি! আবার মুখি থুবড়ে আপনার প্রেমে পড়লাম৷ এই প্রেমে পড়া বিষয়টা পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর এবং কুৎসিত একটা অনুভূতি। জানেন তো? সুন্দর কারণ আমার মনে হয় কেউ যেনো হুট করে আমার নির্জীব জীবনে এক কৌটা রঙ ঢেলে দিয়েছে৷ আর কুৎসিত কারণ.... কারণ আমি মন এবং মস্তিষ্কে আপনার একচ্ছত্র অধিকার হয়ে গেছে৷ কি যন্ত্রণা বলুন তো! এই মিষ্টি যন্ত্রণা থেকে অবশ্য আমি মুক্তি চাই না। কারণ আমি চাই, এই ধলা গরুটা শুধু আমার-ই থাক। 

প্রেম নামক নীল বিষ আমি সেবন করেছি জাওয়াদ সাহেব। এর প্রতিষেধক কেবল আপনি। কি বোকা বোকা কথা! অথচ এটাই সত্যি। জানেন আমি যখন আপনাকে এসব বোকা বোকা কথা লিখছি আমি একই সাথে কাঁদছি এবং হাসছি। কাঁদছি কারণ আমার হৃদয় ভার হয়ে আসছে। তীব্র যন্ত্রণা অনুভূত হচ্ছে। মনে হচ্ছে আপনি যদি এই চিঠিটাকে অবজ্ঞা করেন আমি হয়তো ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাব। আর হাসছি কারণ আমার নিজেকে উন্মাদ লাগছে। ভীষণ উন্মাদ। আচ্ছা জাওয়াদ সাহেব, প্রেমে পড়লে কি মানুষ পাগল হয়ে যায়? আমি কি পাগল হয়ে গেছি? কি সাংঘাতিক বলুন। শেষমেশ কি না একটা পাগলের সাথে আপনাকে ঘর করতে হবে। ইশ আপনার জন্য দুঃখই হচ্ছে। অবশ্য আমার কাছে একটা উপায় আছে। যেমন বিষে বিষে বিষক্ষয়, তেমনি পাগলে পাগলে পাগলামিক্ষয়। আপনিও যদি আমার মত পাগল হয়ে যান তাহলে আমাদের সংসারজীবন সুন্দর হয়ে যাবে।

কি জাওয়াদ সাহেব, হবেন নাকি আমার জন্য পাগল?”

জাওয়াদ গা এলিয়ে দিলো। হাতখানা চোখের উপর রেখে আনমনে বললো,
 “আমি হয়তো সত্যি পাগল হয়ে গেছি।”

*********

জাওয়াদের মামীর মন আজ ভালো নেই। মন খারাপ থাকলে তার রান্নাবান্না করতে ইচ্ছে হয় না। আজও তার রাধতে ইচ্ছে হচ্ছে না। তিনি ভারী গলায় জাওয়াদকে বললো,
“তুই বাড়ি চলে যা, আজ রান্না নেই। মন ভালো নেই আমার।”
“আমি তো খেতে আসিনি। কাজে এসেছি। কিন্তু আপনার মন ভালো না কেনো মামী?"

মামী নাক টেনে টেনে বললেন,
 “জানিস, পড়াবাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। বলছে সে নাকি ঠগ। কতবড় বেয়াকুবের দল ভাব। গজব পড়বে দেখিস এদের উপর। ভালো মানুষকে কি না বলে ঠগ। ওরা কি জানে পড়াবাবার ক্ষমতা। বাজারে এক এক বেয়াকুব ঘুরে বেড়ায়। যত্তসব।”

পড়াবাবার জেলে যাওয়ার কথাটা শুনে খুব অবাক হলো না জাওয়াদ। এমনটা হবার ই কথা ছিলো। লোকটা ভাওতাবাজ তাতে তো সন্দেহ নেই। সে কেন তার প্ররোচনায় এসেছিলো সেটাই প্রশ্ন। তার মতো যৌক্তিক পুরুষ কি না স্বপ্ন থেকে বাঁচতে তার শরণাপন্ন হয়েছে। হাস্যকর, নেহাত হাস্যকর। কি কি না করেছে লোকটির কথা মত। কাউকে বললে সে নির্ঘাত তাকে মাথা খারাপ উপাধি দিয়ে দিবে। কিন্তু কিছু প্রশ্ন রয়েই গেছে। সেই উত্তরগুলো পড়াবাবাই দিতে পারবে। ফলে মামীকে শুধালো,
 “উনি কোন থানায় আছেন মামী?”

*********

মোহাম্মদপুর থানার সামনে দাঁড়িয়ে আছে জাওয়াদ। মনটা খচখচ করছে। সে এখানে কেন এসেছে? সে কি বিশ্বাস করছে পড়াবাবা তার অস্বাভাবিক মনোস্থিতিকে শান্ত করতে পারবে? সে কি অন্ধবিশ্বাসী হয়ে যাচ্ছে? আজকাল মনটা খুব দূর্বল হয়ে আছে। এক তীব্র অচেনা অনুভূতি তাকে কাবু করে ফেলেছে। এই অনুভূতিটার নামটা তার জানা নেই। তবে অনুভূতির উৎস চিংকি। অদ্ভুত ব্যাপার ঘটেছে। গত পরশু সে চিংকির কলেজে গেছে। দূর থেকে চিংকিকে দেখতে। চিংকিকে দেখতেই সে ছুটে লুকিয়ে গেছে। হৃদয় বেসামালভাবে স্পন্দিত হচ্ছিলো। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে যাচ্ছিলো। মনে হচ্ছিল এখনই বুকের খাঁচা থেকে বেরিয়ে যাবে হৃদয়। কি অদ্ভুত। 

থানার লকাপে বন্দি পড়াবাবা। তার মুখে ক্লেশের চিহ্ন নেই। হাফপ্যান্ট পরিহিত মানুষটি পায়ের উপর পা তুলে চাটাই এ শুয়ে আছে। তার মুরিদ এখন লকাপের বাকি আসামী। জাওয়াদ যেতে সে চোখ বন্ধ অবস্থাতেই শুধালো,
 “ভালো আছো জাওয়াদ? তোমাকে দেখতে বড় ইচ্ছে করছিলো।”
.
.
.
চলবে........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp