আশিয়ানা - পর্ব ৮৭ - শারমিন আক্তার বর্ষা - ধারাবাহিক গল্প


অমাবস্যার রাত। চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। আকাশের বুকে বিরাজমান খুব চিকন চাঁদ। ঘন অরণ্যের মাঝের সরুপথ ধরে চারটা গাড়ি নিঃশব্দে চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে দূর দূরান্ত থেকে ভেসে আসছে নাম জানা-অজানা পশুপাখির বিভীষিকাময় চিৎকার। অরণ্যের ঠিক মাঝখানে একটা দুইতলা বাড়ি। বাড়ির সামনে গাড়িগুলো এক-এক করে থামলো। প্রথম গাড়িটা থেকে নামলো বলিষ্ঠ দেহের অধিকারী জেগান। এরপর অন্য গাড়ি থেকে বেশ কয়েকজন লোক নামে। জেগানের সমস্ত কাজের পার্টনাররা ওর দিকে এগিয়ে এল। জেগান চোয়ালদ্বয় শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমজন হাই-হ্যালো কিছু না বলে শুরুতেই প্রসঙ্গে চলে গেল। শক্ত গলায় বলল,
  'হঠাৎ ডাকার কারণ আমাদের লুকানো শত্রু। তাকে ধরতে পেরেছি। এইসবের পেছনে মার্কাসের হাত আছে। আমাদের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই সে লোকজন খুন করে রাস্তায় ফেলে রাখতো। যেনো পুলিশ ভাবে খুন আমরা করেছি।'

জেগান ভ্রু কুঞ্চিত করল। প্রথম জন থামার পর ওদের মধ্য হতে আরেকজন বলল,
  'মার্কাসের ধারণা ওর বাবাকে খুন করে তুই ওর বাবার সব পাওয়ার নিজের করে নিয়েছিস। এজন্য ও তোকে মেরে পাওয়ার ছিনিয়ে নেওয়ার প্ল্যান করেছিল। হিংসা, ক্রোধ থেকে সে অনেকগুলো নির্দোষ মানুষকে হত্যা করেছে।'

জেগান ভারী নিঃশ্বাস ফেলল। কর্কশ গলায় বলল, 
  'সে কোথায়?'
  'মার্কাস ও তার কিছু লোকজন কে আমরা ধরতে পেরেছি। আমাদের মারার জন্য ওরা আমাদের কটেজে গিয়েছিল। পাশা উল্টে ওরা নিজেই বন্দী হয়েছে।'
  'মার্কাসের কাছে নিয়ে চল।'

জেগান দুজন লোকের সাথে বাড়ির ভেতরে চলে গেল। বাইরে অমাবস্যার অন্ধকার রাত্রি, ঘরের মধ্যে দশজন পুরুষ লোক। ঘরের উচু স্থানে একটা চেয়ার। জেগান ওর চেয়ারে আরাম করে বসে। ওর সামনে দুজন মাথা নিচু বসে আছে। দুজনের শরীরে অসংখ্য ক্ষত। কাঁটা অংশ থেকে রক্ত পড়ে সেখানেই শুকিয়ে গেছে। জেগান অবিজ্ঞ চোখে মার্কাস ও আর্থেস কে দেখল। রক্তাক্ত মুখ। স্পষ্ট বোঝা গেল না। আবারও চোয়ালদ্বয় শক্ত হয়ে এলো তার। 

জেগান মার্কাসের উদ্দেশ্য রাশিয়ান ভাষায় বলল, 
  'তুমি আমার পায়ের কাছে কুকুরের মতো বসে আছো। দেখে আমার খারাপ লাগছে খুব।' বলে থামল জেগান। একটু পর তাচ্ছিল্যের সাথে আবারও বলল, 'আমার সাথে শত্রুতা তোমার নিজের উপরই ভারী পড়েছে, মার্ক।'

মার্কাস খুব কষ্টে চিৎকার করে বলল, 
  'তুই আমার বাবার খুনি। আমি তোকে ছাড়বো না। আমি তোকে মারার আগে তুই আমাকে মেরে ফেল।'

জেগানের হাসির শব্দে চারিদিকে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ও জোরে হেসে উঠল যেন অনেক বছর পর মজার কৌতুক শুনেছে। জেগান চেয়ারে বসে থেকে খানিকটা ঝুঁকে এল মার্কাসের দিকে। শক্ত ও গম্ভীর কণ্ঠে বলল, 
  'তোমাকে খুঁজে পেতে আমার এক সপ্তাহ লেগেছে। আর তুমি আমাকে পাঁচ বছরেও খুঁজে পাওনি। আর এখন পাওয়া মাত্রই তোমার মরার শখ হয়েছে। তুমি এত দুর্বল আর আমাকে মারার চিন্তা করেছ। হাউ ফানি!'

মার্কাস গর্জে উঠল। নিজেকে নিয়ে এমন উপহাস কোনো ভাবে মানতে পারছে না মার্কাস। রাগে, ক্ষোভে হাঁটু সোজা করে উঠতে চেষ্টা করল সে। তাৎক্ষণিক পেছন থেকে একজন লোক এগিয়ে এল। সঙ্গে সঙ্গে মার্কাসের পিঠে আঘাত করল সে। হুড়মুড়িয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল মার্কাস। ব্যথায় আর্তনাদ করে উঠল।

জেগান তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল লোকটার দিকে। লোকটা ভয় পেয়ে কিছুটা পিছিয়ে গেল। জেগান প্রলম্বিত শ্বাস টানলো। কিছুক্ষণ পিনপতন নীরবতা বয়ে গেল চারপাশে। নিরবতা টুকু কাটিয়ে জেগান স্বাভাবিক গলায় বলল, 
  'তুমি যা করেছ সব অন্যায়, মার্ক। তোমার শাস্তি হওয়া উচিত। তোমাকে শাস্তি আমি না বরং দিবে পুলিশ। মার্ক! তুমি আমাকে চেনো না। কখনও দেখোওনি। আমি নয় বছর তোমার বাবার সঙ্গে থেকেছি। উনি শুরু থেকেই আমার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর ছিলেন। আমার যদি ওনাকে মারার উদ্দেশ্য থাকতো তাহলে আমি তাকে নয় বছর আগেই মারতে পারতাম। শুধু শুধু নয়টা বছর ওনার হয়ে কাজ করতাম না। আমার কাছে সে রাত অমাবস্যার রাতের চেয়ে অন্ধকার, বিভৎস। চার্লিক স্যার বাড়িতে একাই ছিলেন। আমি গিয়েছিলাম এয়ারপোর্টে। সেদিন রাতে আমাদের বড় একটা প্রোজেক্ট ফাইনাল হওয়ার জন্য চায়না থেকে লোক আসার কথা ছিল। আমি তাদের রিসিভ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু গিয়ে দেখি আমাকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাদের ফ্লাইট পরশু ছিল। হঠাৎ স্যারের কথা মাথায় আসায় সে-সময় তাড়াহুড়ো করে শহরের দিকে ছুটে যাই। আমার সেদিন পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়। কেউ তখন স্যারকে হত্যা করে চলে যায়। বাড়িঘরের আসবাবপত্র সব লণ্ডভণ্ড হয়ে ছিল। ড্রয়িংরুমে পড়ে ছিল স্টাফদের মৃতদেহ। সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে স্যারের ঘরে যাই। ঘুমন্ত অবস্থায় স্যারকে গুলি করে মারা হয়। কয়েকজন গার্ড ও স্টাফ তখনও বেঁচে ছিল। তাদের হাসপাতালে পাঠাই। কতজন পথেই মারা যায়। পরবর্তীতে যারা সুস্থ হয় তাদের মধ্যে কয়েকজন কাজ ছেড়ে দেয়। কারণ বস মারা গেছে। কার জন্য কাজ করবে? তোমার সঙ্গে তখন যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কয়েক বার তোমার সঙ্গে লোকজন দেখা করতে গিয়েছিল ভার্সিটিতে। তুমি তাদের ইগনোর করতে। কল রিসিভ করতে না। কথা শুনতে চাইতে না। বার বার নাম্বার চেঞ্জ করতে। পরবর্তীতে জানতে পারি তুমি নারী আসক্ত। নারী ছাড়া তোমার জীবনে ইম্পর্ট্যান্ট কিছুই না। এমন চরিত্রহীন, মেরুদণ্ডহীন ছেলে কোনোভাবে চার্লিক স্যারের পজিশন সামলানোর যোগ্য না। তখন বাকি সবার অনুরোধে আমি সে চেয়ারে বসি। দুই মাসের মধ্যে আসল খুনিদের খুঁজে বের করে কঠিন মৃত্যু দেই। আমি বুঝতে পারছি মার্ক তোমার পক্ষে আমার এসব কথা বিশ্বাস যোগ্য না। তোমার বাবার সঙ্গে কাজ করতো এমন অনেকেই এখনো বেঁচে আছে। এবং তুমি তাদের চেনো। তুমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নিও আমার কথাগুলো সত্য কি-না? আমি তোমার বাবাকে নিজের গুরু ভাবতাম এবং আজও ভাবি। এজন্য আজ তোমাকে জীবিত ছাড়লাম। আশা করি এখান থেকে বেরিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দিবে। এবং আমার সঙ্গে তোমার দেখা হয়েছে এটা পুরোপুরি ভুলে যাবে। অন্যায় ভাবে লোক মেরেছো তাই তুমি কঠিন শাস্তি প্রাপ্ত।'

মার্কাস মাথা নিচু করে। ঠোঁট উল্টিয়ে ফেলল সে। ইতালি আসার আগে সে ওর বাবার বন্ধু ও পরিচিত লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। সে রাতের ঘটনা তারা মার্কাসের কাছে সংক্ষেপে বলেছিল। কিন্তু ওদের কথা বিশ্বাস করতে পারেনি মার্কাস। যখন জানতে পারে ওর বাবা মারা গেছে আর তার পজিশনে জেগান বসেছে। মার্কাসের মন জেগানের বিরুদ্ধে বিষিয়ে দেয় কাছের কিছু মানুষ। মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দেয় জেগান ওর বাবার খুনি। বাবার বন্ধুদের মুখের কথা সে বিশ্বাস করেনি। পাঁচটা বছর পরিবার রেখে জেগানকে মারার পেছনে সময় নষ্ট করেছে। মার্কাস ওর বাবার মুখে সব সময় জেগানের প্রশংসা শুনে অভস্ত্য। প্রথমবার যখন তাকে বলা হয় জেগান-ই তার বাবা চার্লিককে খুন করেছে। তখন বিশ্বাস করতে পারেনি মার্কাস। তারপর? তারপর ধীরে ধীরে প্রিয় মানুষদের কথায় জেগানকে নিজের একমাত্র শত্রু বানিয়ে ফেলে মার্কাস। আর আজ তার এই পরিনতি।

মার্কাস মাথা তুলে তাকাল। কম্পিত গলায় বলল, 
  'আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমাকে ভুল বুঝেছি। তোমার পথে বারবার কাঁটা হয়েছি। আমার করা খুনের জন্য পুলিশ তোমাকে হন্ন হয়ে খুঁজেছে। আমার বাবা সঠিক লোকই নির্বাচন করে তার পাশে রেখেছিল। তুমিই এই পজিশনের জন্য উত্তম ব্যক্তি।'

আর্থেস! মার্কাসের দূর সম্পর্কের ভাই। আর্থেসের বাবার পরিকল্পনায় এতো কিছু করেছে মার্কাস। আজ হঠাৎ জেগানের কথায় মার্কাস পাল্টে যেতে আর্থেস ক্ষিপ্ত হলো। 

মার্কাসের দিকে তাকিয়ে গর্জন করে বলে উঠল আর্থেস,
  'তুই অপদার্থ আর ও উত্তম। এসব শোনার জন্য পাঁচ বছর ধরে তোর গোলামী করছি? তুই ওকে মারবি। এই আসন হাসিল করবি তারপর তোকে মেরে আমি হবো এই সাম্রাজ্যের মালিক। আমার সব পরিকল্পনায় তুই এত সহজে জল ঢেলে দিয়েছিস। আজ তোকে মেরেই ফেলব।'

আর্থেস ওর জায়গা থেকে উঠে দাঁড়াল। মার্কাস কে মারার জন্য এগিয়ে যেতে লাগল সে। মার্কাসের গলা চেপে ধরবে এমন সময় গুলির আওয়াজ শোনা গেল। পিঠে গুলি খেয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল আর্থেস। মার্কাস জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে। কম্পিত চোখে তাকাল জেগানের দিকে।

জেগানের হাতে পিস্তল। গুলিটা সেই করেছে। জেগান রাশভারি গলায় বলল,
  'আমি তোমার জন্য কনসার্ন তোমার এসিস্ট্যান্টের প্রতি না। সে তোমাকে মারতে চেয়েছে, তোমার হাত ধরে উপরে উঠে তোমাকে মারার প্ল্যান ছিল তার। একটা কথা বলি, জীবনে বন্ধু বানানোর আগে খুব চিন্তা করবে। কারণ বিপদের সময় কাজে আসে না সে বন্ধু শত্রুর সমান।'
মার্কাস মাথা নিচু করল। 

জেগান তার লোকেদের উদ্দেশ্যে বলে,
  'মার্ক যে ঠিকানা দিবে সেখানে নামিয়ে দিয়ে আসো।'
জেগানের পার্টনার বা ওর ডানহাত এগিয়ে এল। রুক্ষ্ম গলায় বলল, 
  'ওকে ছাড়া কি ঠিক হবে? ও যদি আবার আমাদের পথের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়?'
জেগান বলল,
  'হলে হবে। ওর বাবার জন্য এবার মাফ করেছি। দ্বিতীয় বার করব না।

•••••••••••••

মার্কাসকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু সে যাবে না। ও ওর বাড়ির ঠিকানা দিল। এখন বাড়ি যাবে তারপর এদেশ ছেড়ে কানাডা চলে যাবে। কয়েক মাস আগে একবার ওর শ্বশুরের থেকে শুনেছিল ওর ওয়াইফ দুই সন্তানকে নিয়ে এখন কানাডায় থাকছে। কাল সকালেই ওয়াইফ আর সন্তানের কাছে চলে যাবে। এই পাঁচ বছরে ওদের সঙ্গে তেমন কথা হয়নি তার। বাচ্চাগুলো অনেকটাই বড় হয়েছে হয়তো। কতগুলো বছর পর আবার নিজ পরিবারকে সামনে পাবে। চোখে দেখবে, জড়িয়ে ধরবে, বাচ্চাদের আদর করবে। মার্কাস গোপনে মৃদু হাসল। মলিন হাসি।

ওর বাড়ির সামনে গাড়ি থামল। মার্কাস কে গেইটের সামনে নামিয়ে দিয়ে কালো গাড়িটা সোজা পথে চলে যায়। মার্কাসের শরীরে শক্তি তেমন নেই। ব্যথা অনেক। সে কুঁজো হয়ে বাড়ির সদরদরজা পর্যন্ত গেল। লক খুললো। চারিদিক অন্ধকার। মার্কাস পা টিপেটিপে হাঁটতে লাগল। কারেন্টের সুইচবোর্ডের কাছে যাওয়ার আগে লাইটগুলো হঠাৎ জ্বলে উঠায় মার্কাস চমকে উঠল। তারপর দেখল জোহান ওর ড্রয়িংরুমে বসে আছে। ওর চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে মার্কাসের লোকজন। মার্কাস রেগে গেল। সে ধমকের স্বরে বলল,
  'আমার অনুমতি ছাড়া তোমরা আমার বাড়িতে ঢোকার সাহস কোথায় পেলে?'

জোহান শব্দ করে হাসল। ব্যাঙ্গ করে বলল,
  'নিজের হুলিয়া দেখেছ? মনে হচ্ছে কোনো ডাস্টবিনের আবর্জনা।'

মার্কাস বিস্মিত। জোহানকে দেখে অবাক হচ্ছে মার্কাস। জোহানের এই রূপ সে আগে কখনো দেখেনি । জোহান মেরুদণ্ড টানটান করে বসল। তারপর আবার বলল,
  'ভেবেছিলাম আজ তুই জেগানের হাতে মরবি। আমরা এক দুদিন শোক পালন করব তারপর তোর রাজত্বে আমি রাজ করব। কিন্তু সেটা হলো না। তুই আমার সামনে জীবন্ত দাঁড়িয়ে আছিস। ন্যাহ, এটা মানতে পারছি না। ওই শালা জেগান, দয়া করে তোর জীবন ভিক্ষা দিয়েছে কিন্তু আমি সেটা দেবো না।'

মার্কাস চমকাল। ওর শরীরে এত শক্তি নেই যে এখন জোহানের সঙ্গে লড়াই করবে। মার্কাস জোহানকে বলল, 
  'তোর এত বড় সাহস। কার সামনে বসে কথা বলছিস জানিস?' মার্কাস ওর লোকেদের পরখ করে বলল, 'তোরা দাঁড়িয়ে কি করছিস ওকে শেষ করে দে।'

লোকগুলো তাকাল জোহানোর দিকে। জোহান ওদের দিকে তাকিয়ে ইশারা করতেই নয়জন একসঙ্গে মার্কাসের দিকে এগিয়ে গেল। তাকে চেপে ধরে মাটিতে শুয়ে দিল। 
জোহান মার্কাসের দিকে তাকিয়ে ভারি কণ্ঠে গর্বের সঙ্গে বলল,
  'তোর সব কিছু আমার। শুধু আমার। এখন সময় আসছে সেহরিশ ফাতিন চৌধুরী কে ধ্বংস করার। ভাগ্য ভালো ছিল বলে একমাস আগে বেঁচে গেছে কিন্তু এইবার সেই সুযোগ পাবে না। আজ তোর প্রতিশোধের আগুন নিভে গেলেও আমার নেভে নাই। আমি এখনো প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছি।'

মার্কাস কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বলল, 
  'সেহরিশ ফাতিন চৌধুরী একজন সাধারণ ও ভালো মানুষ। আর তুমি তার সাফল্য সহ্য করতে পারছো না। সে কখনো তোমার সঙ্গে শত্রুতামি করেনি বরং তুমি বার বার গিয়ে সেধে অপমান হয়েছ। তুমি অযোগ্য! এটা স্বীকার করছ না। প্রতিশোধ নিতে একজন ভালো মানুষকে বারবার বিপদে ফেলছো। সেহরিশের বোনকে তুমি মেরেছ। এটা যদি সে জানতে পারে তাহলে কি হবে? একবার ভেবে দেখো। নিজের হিংসার জন্য নির্দোষ মানুষ গুলোর প্রাণ নিচ্ছো তুমি জোহান।'

মার্কাসের কথায় দূর্লভ হাসির রেখা ফুটে উঠল জোহানের ঠোঁটে। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলল, 
  'ভালোবাসা আর লড়াইয়ের মধ্যে তো সব জায়েজ। আমার বন্ধু! আর সেহরিশ, কিভাবে জানবে ওর বোনকে আমি মারিয়েছি? বলার জন্য তো তুই বাঁচবি না। আর ও জানলেই বা কী? সামান্য সিঙ্গার। আমার চুলও ছিঁড়তে পারবে না। ওর সে যোগ্যতাই নাই।'
.
.
.
চলবে..........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp