চলছে বর্ষাকাল,সারাদিন আকাশে কালো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে আর গুড় গুড় শব্দে ডেকে যাচ্ছে।মাঝে মাঝেই ঝপঝপিয়ে ঝরে যাচ্ছে বাদল ধারা।
বর্ষার ছোয়া পেয়ে কদম্ব ডাল সজ্জিত হয়েছে সুদর্শন গোল গোল হলুদ ফুলে।
ক্যামেলিয়া আর টুসি যখন বাইরে বের হবে এমন সময় ঝপাঝপ করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো।
বাইরে যাবার প্ল্যান টাই ভেস্তে গেলো তাদের।
দুজনেই দুই গালে হাত দিয়ে হাঁটুতে ভর দিয়ে সোফায় বসে বসে পায়ের নখ দিয়ে টাইলস করা মেঝে খুটিয়ে চলছে।
হঠাৎই কলিং বেল বেজে উঠলো,
টুসি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মেইন দরজা খুলার জন্য এগিয়ে গেলো।
দ্বিতীয় বার কলিং বেল বাজতেই টুসি তড়িঘড়ি করে দরজা খুলে অবাক হয়ে গেলো―
"সেকি বড় খালামণি এই সময়ে তাও আবার বৃষ্টিতে ভিজে?"
"কেনো তোদের বাড়ি আসতে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে?
কোথায় টাওয়েল এগিয়ে দিবি তা না জেরা করে চলেছিস"!
রান্না ঘর থেকে দৌঁড়ে এলেন নাজনীন।
"সেকি আপা তুমি না বললে দুপুরে আসবে?
"আর বলিস না,ওই মাহাদ" বলেই দাঁত দিয়ে জিভ কামড়ে কথা ঘুরালেন।
"দেখছিস না বৃষ্টির কি অবস্থা ?তাই বৃষ্টি থামলো বলে বের হলাম আর রাস্তায় ই বৃষ্টি শুরু হলো।
টুসি একটা শুকনো টাওয়েল এগিয়ে দিলো মিসেস মিতালীর উদ্দেশ্যে।
হাত মুখ মাথা মুছে মিসেস মিতালি সোফায় গিয়ে বসলেন।
মিসেস মিতালিকে দেখে ক্যামেলিয়া সালাম দিয়ে উঠে যেতে চাইলো।
সহসাই মিসেস মিতালি বলে উঠলেন
"আরে বাবা কোথায় যাচ্ছ?বসো একটু আলাপ করি তোমার সাথে,অনেক দিন বাদে দেখলাম তোমাকে!"
মহিলা খুব সুন্দর করে মিষ্টি হেসে কথা বলেন।মিসেস মিতালিকে ক্যামেলিয়ার ভালো লাগলো।
ইতস্তততা কাটিয়ে ইজি হয়ে বসলো ক্যামেলিয়া।
মিসেস মিতালি বলতে শুরু করলেন
আমি টুসীর বড় খালামনি,তোমার ও খালামনি।
তুমি আমাকে কখনো দেখোনি।কিন্তু আমি তোমার জন্মের সময় থেকেই তোমাকে চিনি !
বলেই অমায়িক হাসলেন মিসেস মিতালি।
ক্যামেলিয়া উৎসুক হয়ে মায়াবী নীল চোখে মিসেস মিতালীর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো।
মিসেস মিতালি ক্যামেলিয়ার পাশে বসে ক্যামেলিয়ার হাত আলতো করে নিজের করপুটে ভরলেন।
ক্যামেলিয়া হাত গুটিয়ে চুপ করে রইলো।
মিসেস মিতালি ক্যামেলিয়ার হাতে আলতো স্পর্শ করতে করতে বললেন
টুসীর খালু আর তোমার বাবা খুব ভালো বন্ধু ছিলো।
তোমার বাবার মাধ্যমেই টুসীর মা আর টুসীর বাবার বিয়ে হয়েছে সেটা কি তুমি জানো?
না বোধক মাথা নেড়ে ক্যামেলিয়া মিসেস নাজনীন এর দিকে তাকালো।
মুচকি হাসলেন মিসেস নাজনীন।
মিতালি আবার বলতে শুরু করলো আমার তিনজন ছেলে মেয়ে আছে,বড় মেয়ের বছর দুই আগে বিয়ে হয়েছে স্বামী নিয়ে নিউইয়র্ক থাকে ।
মেঝো ছেলে উড়াউড়ি করে আর ছোট মেয়েটা অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে।
তুমি হয়তো ভাবছো তোমার সাথে এসব কেনো বলছি তাই না?
ক্যামেলিয়ার দিকে দৃষ্টি দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন মিসেস মিতালি।
ক্যামেলিয়া কিছুই না বলে চুপ করে মিসেস মিতালীর দিকে তাকিয়ে দেখতে থাকলো।
"তার মা থাকলেও এভাবে তাকে পাশে বসিয়ে আদর করতো, অনেক গল্প করতো।
মিসেস মিতালীর এই আদর যুক্ত স্পর্শ ক্যামেলিয়ার অনেক ভালো লাগছে।
কিন্তু সে মন খুলে মিসেস মিতালিকে কিছুই বলতে পারছে না।
নিজের এই মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারার অপারগতায় মাঝে মাঝে নিজের উপর নিজেরই ভীষন রাগ হয়।
মিসেস মিতালি আবার বলতে শুরু করলেন
তোমাকে একটা মজার কথা বলবো শুনবে?
ক্যামেলিয়া মাথা উপর নিচ করে সায় জানালো সে শুনবে।তার অনেক ভালো লাগছে শুনতে।
তোমার খালু আর আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি।উনি যখন ইন্টার পরীক্ষা দেন তখন আমি ক্লাস টেনের ছাত্রী।
আব্বা আমাকে হঠাৎই বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন।।
আব্বা ছিলেন খুব সহজ সরল মনের মানুষ।
বাসায় নিজের পছন্দের মানুষের নাম বলতেই ধরে বেঁধে তোমার আংকেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন আব্বা আমাকে।
তোমার আংকেলের তিন কুলে আমার শাশুড়ি আর ছোট ছোট দুটো বোন ছাড়া কেউ ছিলো না।
এজন্য বিনা ঝামেলায় আমাদের বিয়েটা হয়ে যায়।
বিয়ের পর তোমার আংকেল মেসে থাকতো আর আমি বাবার বাড়ি।
মাঝে মাঝেই চুরি করে রাতের বেলা দেখা করতে আসতো দেয়াল টপকে।
সেকি কান্ড!
বলেই খিলখিল করে হেসে উঠলেন মিসেস মিতালী।
ক্যামেলিয়া মেপে হাসলো একটু।
তোমার বাবা নাফিজ যতোদিনে বিয়ে করেছে ততোদিনে আমি তিন বাচ্চার মা হয়ে গিয়েছি মুচকি হেসে বলে উঠলো মিতালী।
আমার বড় মেয়ের বয়স বত্রিশ, ওর একটু দেরিতে বিয়ে হয়েছে।নিজের ক্যারিয়ার গুছানো ছাড়া বিয়ে করতে রাজি হলো না।
ছেলেটার বয়স ঊনত্রিশ,খুব বাউন্ডুলে আর ছোট মেয়েটার বয়স তেইশ।
তোমার জন্মের সময়ের সাদা টাওয়েলে মোড়ানো ছবিটি এখনো সযত্নে আমার ঘরে রয়েছে কথাটি বলেই তপ্ত শ্বাস ছাড়লেন মিসেস মিতালি।
তোমার মা যখন বেঁচে ছিলেন প্রায়ই কথা হতো আমাদের,নাফিজের কাছ থেকে তোমার মা ভালোই বাংলা রপ্ত করেছিলো।
ভালোবাসার টানে বিদেশিনী এমিলি পুরোদস্তুর বাঙালি হতে পেরেছিলো।
কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না।
বলেই চোখের কোণে জমে থাকা জল আঁচলে মুছলেন মিসেস মিতালি।
মায়ের কথা মনে পড়তেই মন আকাশে মেঘ জমলো ক্যামেলিয়ার কিন্তু কাঁদলো না।
অন্য মানুষের সামনে অশ্রু বিসর্জন দিতেও তার অস্বস্তি।
মিসেস মিতালি বলে উঠলেন
" মাতৃহীন তুমি কিভাবে দূর দেশে বড় হয়েছো সব আমাদের সকলের জানা।
কিন্তু আমরা কেউ তোমার জন্য কিছুই করতে পারিনি।"
"তোমার বাবাও যে হঠাৎ এভাবে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করবেন এটা আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি।"
"তুমি কি জানো কে তোমাকে এখানে আসার ব্যাবস্থা করে দিয়েছে?" আদুরে স্বরে জিজ্ঞেস করলেন মিসেস মিতালী।
ক্যামেলিয়া অপরাধীর ন্যায় মাথা নাড়লো,সে জানে না কে তাকে এখানে এনেছে।
তার বাবার মৃত্যুর দুদিন দিন আগে হসপিটালে সে একটি ছেলেকে দেখেছে কিন্তু মাফলারে তার মুখ ঢাকা থাকায় চেহারা দেখতে পারেনি।
সেই ছেলেটি একান্তে তার বাবার সাথে কিছু কথা বলেছে,কিন্তু কি কথা বলেছে সেটাও সে জানেনা।
তার নানীর কাছে শুনেছে এই লোকই তার বাবাকে তার মায়ের পাশে দাফনের ব্যাবস্থা করেছে এবং আইনি সব ঝামেলা মিটিয়েছে।
ক্যামেলিয়া তার বাবার মৃত্যু শোক সইতে না পেরে সেন্সলেস হয়ে হসপিটাল এ পড়ে ছিলো।
তিনদিন পর যখন সে বাসায় ফিরে তখন সে জানতে পারে যুবক টি এ দুদিন ক্যামেলিয়ার পাশেই ছিলো।কিন্তু আজ ভোরে জরুরি কাজে চলে গিয়েছে। কিন্তু যাবার আগে তার জন্য ইমারজেন্সি ভিসার এপ্লাই করে দিয়ে গিয়েছে।
তার নানী ভিসার আবেদনের ডকুমেন্টস গুলো ক্যামেলিয়ার হাতে দিয়ে বলেছিলো ―
তাদের ঘর থেকে তার নানীর সহায়তায় যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র,ছবি খুঁজে বের করে ছেলেটি আবেদন করে দিয়েছে।বলেছে ভিসা কার্যকর হতে পনেরো দিনের মতো সময় লাগবে।।
ছেলেটি আরো বলেছিলো তার বাবার শেষ ইচ্ছে ক্যামেলিয়া যেনো তার বড় চাচার কাছে বাংলাদেশ ফিরে যায়।
ক্যামেলিয়া বিষাদ বদনে কাঁপা কাঁপা হাতে তার নানীর থেকে সকল পেপার্স গ্রহণ করে ছিলো।
পূর্বে থেকেই তার কাছে সুইস পাসপোর্ট থাকায় এয়ারপোর্ট এ কোনো ঝামেলা হয় নি।
এয়ারপোর্টে তার নানা নানী তাকে পৌঁছে দিলে একজন এয়ার হোস্টেজ তাকে রিসিভড করে এবং হাত ধরে বিমানে বসিয়ে দেয়।
বিমানে উঠার পর একজন কেবিন ক্রু সুইস ছেলে সার্বক্ষণিক তাকে নজরে রেখে সেইফলি দুবাই এয়ারপোর্ট এ বিমান ল্যান্ড করার পর বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইতিহাদ বিমান পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
সে শুধু সুইস কেবিন ক্রু থেকে অল্প জেনে ছিলো যে,ইতিহাদ বিমানের ফ্লাইং ক্যাপ্টেন তার সকল ব্যাবস্থা করেছে এপর্যন্ত আসার।
বাংলাদেশ বিমানে উঠে সেখানেও সে বিশেষ আতিথেয়তা পেয়েছে।
এরপর বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট এ এসে রিজভী আর তার দাদু,বড় চাচা কে দেখে সে বেমালুম সেই ক্যাপ্টেন এর কথা ভুলে গিয়েছিলো।
এরপর তো তার এখানে পৌঁছানো নিয়ে কোনো প্রশ্নই মাথায় কাজ করেনি আর।
" তাহলে কে ছিলো সেই ক্যাপ্টেন?"
কি ভাবছো মা? নরম কন্ঠে জানতে চাইলেন মিসেস মিতালি।
হঠাৎ ডাকে ক্যামেলিয়া ধ্যান ভেঙে কাচুমাচু করতে থাকলো।
মিসেস মিতালি ক্যামেলিয়ার গালে মমতার পরশ বুলিয়ে বলে উঠলেন
―আমি জানি তুমি মা ছাড়া একা একা বড় হয়েছো তাই তুমি অনেক কিছুই বুঝতে পারো না বা চাইলেও বলতে পারো না।
সবসময় জড়তা কাজ করে তোমার ভেতর।কিন্তু বাবারে ,কাউকে মনের কথা খুলে না বললে কেউ তো তোমার মনের ব্যাথাও বুঝতে পারবে না।
মানুষের কাছে নিজের মনকে মেলে ধরলে শান্তি লাগে,কষ্ট কমে,তিতক্তার ওজন কমে।
বুঝতে পেরেছো খালামণি কি বলেছি?
ক্যামেলিয়া এবার শব্দ করে আহত স্বরে বলে উঠলো
"জি খালামণি,আমি নেক্সট টাইম থেকে চেষ্টা করবো।"
হঠাৎই মিসেস নাজনীন উৎসুক কন্ঠে বলে উঠলো
"তোর জানতে ইচ্ছে করে না কে সেই লোক যে তোকে এখান অবধি পৌঁছে দিলো?"
হঠাৎই রিজভী গমগমে কন্ঠে বলে উঠলো
"মা অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়,এজন্যই মানুষ বলে মেয়ে মানুষ একত্রে হলে সেখানে শয়তান সুযোগ খুঁজে।
রিজভীর ধমকে চুপ হয়ে গেলেন মিসেস নাজনীন।
রিজভীর ইশারায় টুসি ক্যামেলিয়া কে নিয়ে দুতলায় নিজের রুমে চলে গেলো।
ক্যামেলিয়া চলে যেতেই রিজভী কন্ঠ খাদে ফেলে কঠিন স্বরে বলে উঠলো
"তোমরা তো এতোদিনে বুঝতে পেরেছো যে, মেয়েটা ইন্ট্রোভার্ট টাইপের।তাহলে এতো দ্রুত কেনো এতো ঘাটাঘাটি করছো?
"হঠাৎই ভাই সম্পর্কে এতো কথা তাকে জানাবার দরকার টাই বা কি?
ক্যামেলিয়া ভুল বুঝে যদি নিজে নিজেই ভেবে নেয় যে,আমরা আমাদের মন মতো সিদ্ধান্ত ওর উপর চাপিয়ে দিচ্ছি তখন কি হবে?
"মেয়েটা বিদেশে বড় হয়েছে তার মধ্যে মা ছাড়া,বিয়ে সম্পর্কে তার কোনো ধারনাই নেই।
মেয়েটা বিগড়ে গেলে ভাই এর কি হবে একবার ভেবে দেখেছো?
নাফিজ চাচ্চুই কিন্তু ক্যামেলিয়া পেটে থাকতেই খালুকে প্রমিজ করেছে যে তার মেয়ে হলে মাহাদ ভাইকে জামাই করে নেবে।
শুধু তাই নয় ভাইয়ের যখন পনেরো বছর বয়স তখন থেকেই চাচ্চু ভাই কে জামাই বলে ডাকতো।।
ভাই যখন থেকে জেনেছে ক্যামেলিয়ার কথা তখন থেকেই কিন্তু ভাইয়ের লাইফ স্টাইল বদলে গিয়েছিলো।
"কি খালামণি তুমি কি সব ভুলে বসে আছো? উঁচু স্বরে জবাব চাইলো রিজভী।
মাথা দুলিয়ে না বোধক জবাব দিলেন মিসেস মিতালি।
রিজভী আবার বলতে শুরু করলো
ভাইয়ের ঘর তল্লাশি করলে এখনো ক্যামেলিয়ার বাচ্চা কাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত চাচ্চুর পাঠানো সকল ছবির পেন্সিলে আঁকা স্কেচ পাওয়া যাবে বা ক্যামেলিয়ার ছবির পেইন্ট ও পাওয়া যাবে।
ভাই সারাদিন ক্যামেলিয়া বলতেই বিভোর।
ভাই যখন বিমান বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স হিসেবে কঙ্গো তে জাতিসংঘের শান্তি মিশনের জন্য গিয়ে তিন বছর আর দেশে আসতে পারেনি,ক্যামেলিয়া কে না দেখতে পেয়ে কেমন পাগলামি করেছিলো সব কি ভুলে গেছো তোমরা?
একজন বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার থেকে কেনো ভাই বেসামরিক পাইলট হয়েছে এটা আমরা সবাই জানি।
শুধু মাত্র বিনা জটিলতায় বিদেশ যেতে পারবে আর এক নজর ক্যামেলিয়া কে দেখতে পারবে তার জন্য।
চাচ্চু বেঁচে থাকলে আর দাদা ভাই সব মেনে নিলে আজকে সকল ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিতো, আর ক্যামেলিয়া তো আদৌ জানেই না তার সাথে কার বিয়ের ওয়াদা করেছে চাচ্চু!
মেয়েটা বেঁকে বসলে ভাই নির্ঘাত মরে যাবে।
তাই বলছি, তাড়াহুড়ো করে নিজেদের ছেলের বিপদ ডেকে এনো না।
আর ভাই নিজেই তো ইচ্ছে করে লুকিয়ে থাকে যাতে ক্যামেলিয়ার সামনে আসলে বেসামাল না হয়ে পড়ে।
ক্যামেলিয়া কে যখন দেশে আনা হয় ভাই তো ইচ্ছে করেই দেখা করেনি যাতে ক্যামেলিয়ার অন্তত এটা মনে না হয় যে,ভাই তার বিপদে সুযোগ নেবার চেষ্টা করছে।
তাহলে তোমরা এতো উতলা হচ্ছ কেনো?
একটা মেয়েকে কিশোর বয়স থেকে মনে স্থান দিয়ে রাখা চাট্টি খানি কথা না খালামণি।
এক্সট্রোভার্ট মানুষের চাইতে ইন্ট্রোভার্ট মানুষ খুব মারাত্মক হয়।এটা সবসময় মাথায় রাখবে তোমরা।
এরা প্রেম ভালোবাসা, বিয়ে সংসার এসবের থেকে নিজেকে নিয়ে বেশি ভাবে এবং নিজের মতকেই প্রাধান্য দেয়।
এক প্রকার সাইকোলজিক্যাল ডিসওর্ডার ই বলতে পারো।
তাই বলছি আর যাতে ক্যামেলিয়ার সামনে এসব আবোল তাবোল প্যাচাল না পাড়া হয়।
তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না বলে দিলাম।
সময় সুযোগ বুঝে ভাই ই সব কিছু হ্যান্ডেল করবে।
আরো কিছুদিন যাক,ক্যামেলিয়া এখানে সবার সাথে মিশুক।
ভিসার মেয়াদ শেষ হবার আগে ভাই অবশ্যই কিছু একটা করবে।
ওখানে তার বাবা মায়ের কবর আছে,চাইলেই হুট করে তাকে এখানকার নাগরিক বানিয়ে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব বাতিল করানো যাবে?
বাবা মায়ের শেষ চিহ্ন ফেলে সহজেই আসতে রাজি হবে মেয়েটা?
.
.
.
চলবে.........................................................................