হাওয়াই মিঠাই |
ছোট একতলা একটা বিল্ডিং। মূল দরজার পাশেই ছাদে ওঠার সিঁড়ি। প্রত্যেকটা সিঁড়িতেই একটা করে ছােট টব। একেকটা টবে একেকটা ছােট ফুলগাছ। কোনােটাতে গাঁদা ফুল, কোনােটাতে নয়নতারা, কোনােটাতে বেলী, এত ফুলের মধ্যে কোনােটাতে আবার ক্যাকটাসও রয়েছে। মীরা মুগ্ধ নয়নে সেসব দেখছিল। ওদিকে কলিং বেল বাজিয়ে বাজিয়ে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিল রাফি। একসময় ভেতর থেকে রূপের গলা পাওয়া গেল। সে বলল,
"তুম কে এসেচো আমদের বাসায়?"
"আমি রাফি ভাইয়া আপু৷ রাহি ভাইয়া কোথায়?"
"রাই বাইয়া গুমাচ্ছে।"
"ওকে গিয়ে বলাে দরজা খুলতে।"
"ওকে বলেচি। ও শুনতে পায় না। ওল কান নস্ত হুই যাইসে।"
"ওর গায়ে ধাক্কা দিয়ে উঠাও।"
"আমি পালিনা। ওল দজ্জা বন্দ।"
রাহির আবার কী হলাে! বিড়বিড় করে এ কথা বলতে বলতেই ফোন বের করল রাফি। একবার ফোন করতেই ধরলাে রাহি। তার গলার আওয়াজ খুবই স্বাভাবিক। ঘুমন্ত বলে মনে হচ্ছে না। রাহি বলল,
"হ্যাঁ ভাইয়া।"
"দরজা খােল। কতক্ষণ ধরে বেল বাজাচ্ছি!"
"ওহ সরি।"
ফোন কেটে দিয়ে দৌড়ে এলাে রাহি। দরজা খুলে বলল,
"সরি ভাইয়া কানে হেডফোন ছিল।"
"রুপকে একা রেখে দরজা বন্ধ করেছিস কেন?"
"আরে ভাইয়া রূপ ঘুমাচ্ছিল।"
রূপ বলল,
"আমি গুম তেকে উতে একাকা নাস্তা কলেচি আল তিবি দেকেচি। অনেক্কণ আগে উতেছি। আমাল যদি কিছু হুই যাইতাে?"
রাফি হেসে দিল। রাহি রূপের দিকে তাকিয়ে বলল,
"তুমি যেই পাকা তােমার কিছুই হবে না।"
রাফির পেছনে ছিল মীরা। রাফি ভেতরে ঢুকতেই রাহি মীরাকে দেখতে পেয়ে বলল,
"হাই আপু।"
মীরার খুব অস্বস্তি লাগছিলাে। সে মৃদু হেসে বলল,
"হ্যলাে ভাইয়া।"
"বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন আপু? ভেতরে আসুন না।"
রাফি পেছনে ফিরে বলল,
"আরে তুমি এখনাে বাইরে! এসাে এসাে।"
রূপ এবার মীরাকে দেখে বলল,
"আচ্ছা তুম কে?"
মীরা খেয়াল করলাে রাহি ও রূপ দুজনেই দেখতে রাফির মতাে। সে ভেতরে ঢুকে রূপকে কোলে নিতে যাচ্ছিল। রূপ সরে গিয়ে বলল,
"আগে বলাে তুম কে? তালপল তােমাল কাচে যাব। লাফি বাইয়া বলেচে অপলিচিত কালাে কাচে না যেতে।"
মীরা হেসে বলল,
"আমি তােমার মীরা আপু। সেই যে আমাদের ফোনে কথা হয়েছিল? মনে নেই তােমার?"
এবার রূপ মনে পড়ার ভঙ্গি করে বলল,
"ওহ হ্যা মনে পলেচে এবাল। তুম হচ্চ আলেক্তা মীলাপু। আচ্ছা লাফি বাইয়া এতা কি ওই আলেক্তা মীলাপু তা?"
রাফি হেসে বলল,
"হা। যাও ওর কাছে।"
রূপ মীরার দিকে তাকিয়ে বলল,
"আচ্ছা এবাল আমাকে কোলে নাও।"
মীরা রূপকে কোলে নিল।
"ভাইয়া আমি রুমে যাই। লাগলে ডাক দিও।"
এ কথা বলে রাহি তার ঘরে চলে গেল। রাফি মীরাকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে বসালাে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই মীরা আর রূপের বেশ খাতির হয়ে গেল। রাফি একসময় বলল,
"মীরা চলাে নাস্তা করে নাও।"
"আমি নাস্তা করেছি। এখন আর কিছু খাব না।"
রূপ বলল,
"খাও না। আমাল লাফি বাইয়া অনেক মজা বানায়। তফি খাবা তফি? লাফি বাইয়া বানায়।"
"তফি কী?"
রাফি হেসে বলল,
"কফি। ক বলতে পারে কিন্তু কফি বলতে পারে না।"
মীরা হেসে বলল,
"হ্যা আমি লাফি বাইয়ার তফি খেতে চাই।"
রূপ বলল,
"তফি না তাে। তফি তফি।"
মীরা হেসে দিল। রাফি ভেতরে চলে গেল কফি বানাতে।
কিছুক্ষণ পর রাহি এসে রূপকে বলল,
"রুপ চলাে। আমরা এখন রূপের ফেবারিট মুভি দেখব।"
"সত্যি? বেবি'স ডে আউত? কিন্তু আমাল তফি?"
"কফি খেতে খেতেই তাে দেখব।"
"আচ্চা তালে চলাে। মীলাপু তােমাল সাতে আবাল পলে কতা বলবাে।"
মীরা হেসে দিলাে। রাহি আর রূপ চলে যেতেই মীরা ভেতরে ঢুকে রাফিকে খুঁজছিলাে। ড্রয়িং রুম থেকে ডাইনিং রুমে যাওয়ার প্যাসেজের দেয়ালে বাঁধাই করা একটি কাপল ছবি দেখে থমকে দাঁড়িয়েছিলাে মীরা। রাফি তখনই কফির মগ হাতে ডাইনিং রুমে এসেছিলাে। ডাইনিং টেবিলের উপর কফির মগ রাখতে রাখতে রাফি বলল,
"বাবা-মা।"
মীরা অবাক হয়ে বলল,
"তােমার মা বিদেশী?"
রাফি হেসে বলেছিল,
"হ্যাঁ ইউরােপীয়ান।"
"তােমার মায়ের দেশ কোনটা?"
"টার্কি।"
"এজন্যই তােমরা সবাই দেখতে এমন!"
"হ্যাঁ।"
"তাহলে যখন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তখন বললে না কেন?"
"তুমি জিজ্ঞেস করেছাে আমি বিদেশি কিনা। আমি না বলেছি কারণ আমি তাে আর বিদেশী না। এমনকি আমার মাও এখন পিওর বাংলাদেশী।"
"তুমি না বললে তােমার মা বাপের বাড়ি গেছে?"
"হ্যাঁ টার্কি গেছে। ওখানেই তাে তার বাপের বাড়ি।"
মীরা হেসে ফেলল। রাফি রাহিকে ডেকে কফি নিতে বলল। রাহি এসে তার আর রূপের কফি নিয়ে চলে গেল। রাফি একটা কাপ মীরার হাতে তুলে দিয়ে আরেকটা নিজে নিয়ে বলল,
"চলাে আমার রুম দেখাই।"
মীরা কফিতে চুমুক দিয়ে রাফির পেছন পেছন গেল। ঘরে ঢুকেই রাফি দরজা আটকে দিল। মীরা চমকে উঠে বলল,
"দরজা আটকালে কেন?"
"তােমাকে খেয়ে ফেলব তাই।"
মীরা হেসে বলল,
"এহ এত সােজা!"
অথচ মীরা রাফির কথাটার অর্থ সেদিন বােঝেনি। ভেবেছিল বাঘ ভাল্লুকে খাওয়ার মত খাওয়ার কথা বলেছিল রাফি।
মীরা রাফির বিছানায় উপর উঠে বালিশে হেলান দিয়ে বসে কফি খাচ্ছিলাে। রাফি পাশে বসে কফিতে চুমুক দিয়ে একটা হেডফোন গুঁজে দিল মীরার কানে। মীরা তার নিজের গলা শুনতে পেল, সাথে রাফিরও। তাদের ফোনে বলা কথাগুলাে রেকর্ড করেছে রাফি। মীরা বলল,
"রেকর্ড করেছিলে!"
"হ্যা তােমার কন্ঠ এতই ভালাে লেগেছিল যে দ্বিতীয়বার কথা বলা থেকেই রেকর্ড করেছিলাম।"
"অথচ আমি টেরই পাইনি।"
"তােমাকে যদি কেউ উঠিয়েও নিয়ে যায়, তুমি টের পাবে না।"
মীরা অভিমানী গলায় বলল,
"যাহ! বলেছে তােমাকে।"
রাফি হেসে বলল,
"সত্যিই।"
"এই তুমি না বলেছিলে তােমার জানালা থেকে নদী দেখা যায়?
মীরা লাফ দিয়ে নেমে জানালার কাছে গেলাে। বলল,
"কী সুন্দর নদী! নদীর বাতাসে কী আরাম!"
রাফি মীরার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাে। মীরার চুলগুলাে একটা পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকানাে ছিল। রাফি ক্লিপটা খুলে ফেলতেই চুলগুলাে তার পিঠের উপর ছড়িয়ে পড়লাে। সাথে সাথে মীরা পেছনে তাকাতেই রাফির চোখে চোখ পড়লাে। মীরা চোখ নামিয়ে নিতেই রাফি মীরার গালে হাত রেখে হেসে বলল,
"আশেপাশের সব দেখাে শুধু আমাকে ছাড়া। আজ একটু আমাকে দেখাে তাে।"
মীরার যেমন ভালাে লাগতাে, আবার কেমন যেন অস্বস্তিও লাগতাে রাফির চোখের দিকে তাকাতে। খানিকটা লজ্জা, খানিকটা ভয়! অমন নীল চোখ তাে সে এ জীবনে আগে কখনাে দেখেনি। ওই চোখ যেন চোখ নয়, মৃত্যুকূপ!
রাফি মীরার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাে মীরাও। অনেকক্ষণ! সে জানেনা ঠিক কতক্ষণ! রাফির ওই চোখে যে কী ছিলাে আজও জানেনা সে। একসময় রাফি হঠাৎ তার হাত ধরলাে। হাত ধরেই কোথাও নিয়ে চললাে। মীরার মােহভঙ্গ হলাে। সে জিজ্ঞেস করলাে,
"কোথায় যাচ্ছি আমরা?"
"ছাদে।"
"ছাদে কেন?"
"নদী দেখতে। জানালা দিয়ে পুরােটা দেখা যায় না।"
"আচ্ছা চলাে। তােমার বাগানও দেখা হয়ে যাবে।"
ছাদে গিয়ে রাফি গাছ থেকে দুটো লাল পেয়ারা ছিড়লাে। গাছটার পাতা, ডাল, পেয়ারা সবকিছুই খয়েরি রঙের। মীরা অবাক হয়ে বলল,
"এটা কি পেয়ারা গাছ! এত সুন্দর রঙ!"
"দেখােনি এর আগে কখনাে?"
"নাহ!"
রাফি একটা পেয়ারা মীরার হাতে দিয়ে বলল,
"এই গাছে ১২ মাস পেয়ারা ধরে। খেয়ে দেখাে কত মজা।"
মীরা পেয়ারা খেতে খেতে নদী দেখছিলাে। ছােট একটা শান্ত নদী। এক পলকেই দু'চোখে শান্তি এনে দেয়। রাফিও পেয়ারা খেতে খেতে মীরার মত নদী দেখতে লাগলাে। একসময় ছাদের সিঁড়ঘরের দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলাে রাফি। মীরাও সামনে বসে পড়লাে। সামনেই নদী। রাফি বলল,
"মীরা তুমি আমাকে কতটুকু ভালােবাসাে?"
"অনেক। আমি বােঝাতে পারবাে না।"
"আমার জন্য কী কী করতে পারবে?"
"তুমি যা যা বলবে সব।"
"ঠিকাছে তাহলে তােমাকে কিছু কথা বলি। আমি থাকি বা না থাকি, এই কথাগুলাে কখনাে ভুলবে না।"
"তুমি থাকবে না মানে?"
"নির্দিষ্টভাবে কিছু ভেবে বলিনি। দেখাে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। কাল কী হবে আমরা জানি না। মানুষের জীবনেরও কোনাে গ্যারান্টি নেই। আমাদের ব্রেকাপ হতে পারে, মরেও যেতে পারি। তাই বলছি। আমি আজীবন তােমার সাথে থাকলেও তুমি এগুলাে মানবে আমি না থাকলেও। মীরার চোখে পানি এসে গেল। রাফি বলল,
"এত সিরিয়াস হচ্ছ কেন? আমি জাস্ট কথার কথা বললাম, তার মানে এই না যে আমি থাকবাে না। প্লিজ স্বাভাবিক হও। আমি এখন তােমাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলবাে।"
মীরা জামার হাতায় চোখ মুছে বলল,
"বলাে শুনছি।"
"ফার্স্ট অফ অল, বাবা-মা ছাড়া কারাে জন্য চোখের জল ফেলবে না। এমনকি ভাইবােন বা আমার জন্যেও না। একেবারেই না। কান্না হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে দুর্বল দিক। তুমি যদি কারাে সামনে কাঁদো, তুমি তার কাছে ছােট হবে। সে তােমার দুর্বলতাটা দেখে ফেলবে। যখন কান্নার মতাে কিছু হবে তখন চোখটা বন্ধ করে বড় একটা শ্বাস নেবে। আর ভাববে ইউ ডােন্ট কেয়ার অফ দিস। বুঝতে পেরেছাে?"
মীরা মাথা নাড়লাে। মীরা যে আসলে কিছুই বােঝেনি সেই ব্যাপারটা রাফি বুঝে ফেলল।
"এক্সাম্পল দেই। ধরাে আমি একটু আগে যা বললাম তার জন্য তােমার এখন কান্না পাচ্ছে। তাই এখন তুমি চোখ বন্ধ করে বড় একটা শ্বাস নিয়ে ভাববে, ধুর রাফি না থাকলে কী হবে! ছেলের কি অভাব দুনিয়ায়? একটা যাবে দশটা আসবে!"
"আমি এমন ভাবতে পারব না রাফি।"
মীরার চোখ আবার ছলছল করে উঠলাে। রাফি বলল,
"মীরা কাঁদবে না। একদম কাঁদবে না। আমার কিন্তু কান্নাকাটি খুব বিরক্ত লাগে।"
মীরা সেকথা শুনে কেঁদেই ফেলল।
রাফি উঠে দাঁড়িয়ে মীরার হাত ধরে টেনে দাঁড় করলাে। তারপর সিড়ি ঘরে নিয়ে গেলাে। আর তারপর আচমকা জড়িয়ে ধরলাে। মীরার যে কী হলাে! কান্নাকাটি কোথায় যে পালালাে তা সে আজও বুঝে উঠতে পারে না! সেও রাফিকে জড়িয়ে ধরলাে। রাফি বলল,
"আমি কোথাও যাচ্ছি না মীরা। তােমার সাথেই আছি। কিন্তু তুমি বলেছিলে আমি যা বলব সব করতে পারবে। অথচ প্রথমটাতেই ফেইল।"
মীরা রাফির শার্টে চোখ মুছে বলল,
"আর কাঁদবাে না।
রাফি মীরার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
"একেবারে হবে না। তবে চেষ্টা করতে থাকবে। আস্তে আস্তে হয়ে যাবে।"
"আচ্ছা।"
"আর মােস্ট ইম্পর্ট্যান্ট পয়েন্ট, কাউকে অন্ধভবে বিশ্বাস করবে না। ফর এক্সাম্পল, এই যে আমি বললাম আমার বাসায় আসতে আর তুমি চলে আসলে। এটা ঠিক করােনি মীরা।"
"এটা তাে তুমি! তােমাকে বিশ্বাস করবাে না?"
"না। আজ আমার বাসায় আসার পর তুমি আমার বাসা চিনেছাে, আমার বাবা মাকে চিনেছাে, আমার ভাই বােনকে চিনেছাে, আমি কেমন ফ্যামিলিতে বিলং করি তা জেনেছাে। এখন আমাকে তুমি পরিচিত বলতে পারাে কিন্তু আজ সকাল অবধি কিন্তু আমি তােমার অপরিচিত ছিলাম। ফোনে পরিচয় হয়েছে আমাদের। বলতে গেলে কিছুই জানতে না আমার সম্পর্কে। অথচ চলে এলে।"
"আমি তাে তােমাকে ভালােবাসি। ভালােবাসা থেকেই বিশ্বাস জন্মেছে।"
"এত অন্ধবিশ্বাস আমার লাগবে না। আজকে আমি তােমাকে কিডন্যাপ করে বেচেও দিতে পারতাম, তােমার সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করে কাল তােমাকে ছেড়েও দিতে পারতাম।"
মীরা সরে গিয়ে বলল,
"কী বলছাে!"
"অস্বাভাবিক তাে না। এসব তাে ঘটছে অহরহ। পত্রিকা খুললে এসব নিউজ প্রতিদিন দেখা যায়।"
মীরার চোখে এবার ভয়! রাফি বলল,
"তাই বলছি কখনােই কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করবে না। দুনিয়ার সবাই সরল পথে চলে না।"
মীরা ভেবে দেখলাে রাফি ঠিক বলেছে। ব্যাপারটা সে এভাবে ভেবে দেখেনি। মীরা এবার বলল,
"আচ্ছা মনে রাখব এই কথা। আর কী করতে হবে বলাে।"
"লাস্ট অফ অল, মেন্টালি স্ট্রং হতে হবে। তােমার সাথে যদি কখনাে খারাপ কিছু ঘটে, তুমি পজিটিভ থাকবে। যদি কখনাে খারাপ লাগে, হতাশ লাগে, তাহলে ভাববে তােমার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে কারা? তারা কীভাবে আছে? তাদের কথা যখন ভাববে দেখবে তুমি অনেক ভালাে আছাে। তখন তুমি নিজেই শুকরিয়া করবে তােমার বর্তমান অবস্থানের জন্য।"
"এসব কথা আমাকে কেন বলছাে?"
"কারণ তুমি খুব বােকা এবং দুর্বল প্রকৃতির মানুষ। তােমার বিপদের সম্ভাবনা বেশি।"
"সত্যিই?"
"হ্যাঁ।"
"আচ্ছা ঠিকাছে।"
"একটা এক্সাম্পল দেই?"
"হ্যাঁ।"
"তােমার কখন সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে?"
"বাবা বকলে। কারণ বাবা আমাকে অনেক আদর করে। তাই হঠাৎ বকলে আমার খুব খারাপ লাগে।"
"এরপর থেকে বাবা যখন বকবে তখন ভাববে যাদের বাবা বেঁচে নেই তাদের কী অবস্থা! তাদের তাে বকার জন্যও বাবা নেই। এটা ভাবলে দেখবে দিনরাত বাবার বকা খেতেও ভালাে লাগছে।"
মীরা হেসে বলল,
"আচ্ছা।"
"এখন থেকে নেগেটিভ জিনিসগুলাে এভাবেই ভাববে, দেখবে জীবন সহজ এবং সুন্দর।"
পর্ব ১১ | পর্ব ১৩ |