মাত্র বারোদিনে ঢাকা বিভাগজুড়ে ঘটে গেল ছয়'ছটা রহস্যময় খুন। সমাধান করতে গিয়ে হিমশিম খেল গোটা পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। খুন সম্পর্কিত কিছু তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা হল আলাদা জায়গায়, আলাদা সময়ে হলেও খুনগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। অবশেষে কেইসটা তুলে দেওয়া হল গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হল ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে তুখোড় তরুণ ইনভেস্টিগেটর তুহিন আহমেদকে। আদাজল খেয়ে তদন্তে নামল তুহিন। রহস্যময় এই হত্যালীলার সমাধান করতে গিয়ে তুহিনের পরিচয় ঘটল আন্ডারওয়ার্ল্ডের অন্ধকার জগতের অজানা এক গল্পের। সে গোলকধাঁধায় নিজেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলল তুহিন। ওর সন্দেহের তীর তখন সেই জগতেরই প্রতাপশালী এক রাজপুত্রের দিকে। কিন্তু রাজ্যের পাঠ চুকিয়ে রাজা, রাজপুত্র নিখোঁজ। নিঃস্ব, বিধ্বস্ত গোটা সম্রাজ্য। কী ঘটেছিল সেখানে? দুটো ঘটনা কী একইদিকে নির্দেশ করছে? সত্যিই কী খুনগুলো পরস্পর সম্পর্কিত? হলে কী সেই সংযোগ? কে সেই অন্তর্নিহিত খুনি? কেন ঘটাচ্ছে এই হত্যালীলা? লোভ, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা নাকি অন্যকোন অন্তর্নিহিত কারণ? উত্তর খুঁজতে গিয়ে একের পর এক চমকপ্রদ ঘটনার সঙ্গে পরিচয় ঘটতে থাকে তুহিনের। যা চমকে দেবে পাঠকদেরকেও।
বিষে সবার ভয়! বিষাক্ত বস্তু এড়িয়ে চলার প্রবণতা বরাবরই দেখা যায় মানুষ নামক এই সচেতন প্রাণীর মধ্যে। জগতশ্রেষ্ঠ প্রাণীগুলো জানেনা, নিজেদের মধ্যেই কী প্রবল বিষ বহন করে তারা। বোঝেনা, প্রকৃতির কাছে তারা কালকেউটের চেয়েও ভয়ংকর! এদিকে শক্তিশালী কিছু চক্র সেই বিষ প্রয়োগ করে ধ্বংস করে দিচ্ছে সমাজ, দেশ। আইন, প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ধসিয়ে দিচ্ছে সমাজব্যবস্থা। যাদেরকে বলা হয় মাফিয়া! না, খুনখারাবি, ডাকাতি, ছিন্দাই করে বেড়ানো পাতি মাফিয়া না। এরা বাস্তবিক অর্থেই মাফিয়া। যারা কখনও সামনে আসে না, কখন নিজেদের প্রকাশ করেনা। আবৃত থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, বিনোদনমূলক ব্যক্তিত্বের আড়ালে। জনসাধারণের কাছে এরা সেই মিথগল্প। যা শোনা যায়, বোঝা যায়, অস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু চাক্ষুস দর্শন করা যায় না। জনসাধারণের আড়ালে তাদের সৃষ্ট সেই রহস্যময় জগতকে বলা হয় আন্ডারওয়ার্ল্ড। এ জগতে সম্রাজ্য যতদ্রুত তৈরী হয়, ধ্বংস হয় তারচেয়েও দ্রুত। সম্রাজ্য ধ্বংসস্তুপে পরিণত হলেও অক্ষুন্ন থাকে তাদের আড়াল প্রদানকারী সেসব ব্যক্তিত্বের মুখোশ। পুনরার নতুন সম্রাজ্য আসে। নিজ স্বার্থে পুনরায় আড়াল তৈরী হয়। এভাবেই চলে, চলতেই থাকে। শুধু সেই ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে থাকে অজানা একেকটা বিষাক্ততার গল্প, বিশ্বাসঘাতকতার গল্প। এমনি এক বিষাক্ততার গল্প অন্তর্নিহিত কালকূট। এখানে কোন কেন্দ্রীয় চরিত্র নেই। আছে কেবল একটা গল্প। স্বাভাবিক জগতের ওপিঠে থাকা বিষাক্ত এক জগতের গল্প। উপস্থিত প্রতিটা চরিত্রের নিজস্ব, স্বতন্ত্র গল্পগুলো এসে একত্রিত হবে এক সুতোয়। যা প্রকাশ করবে স্বাভাবিকতার আড়ালে ঘটে চলা নির্মমতার কাহিনী। সীমা অতিক্রম করবে নীতি, একাগ্রতা, বিশ্বাস, আত্মবিশ্বাস, তেজ, দৃঢ়তা, প্রেম, ভালোবাসা, ত্যাগের মতো চমৎকার সব অনুভূতি। অপরদিকে সর্বোচ্চস্থরে প্রকাশ পাবে বিশ্বাসঘাতকতা, হিংস্রতা, নৃশংসতা, উগ্রতা, স্বৈরাচারীতা, হিংসা, ক্ষোভ, ঘৃণা, প্রতিশোধ, ক্রুরতার মতো ভয়ংকর মনোভাব।
অনিমা কোতয়াল